নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর যানজট নিরসনে সিরাজউদ্দৌলা সড়ক থেকে শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ১ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার চার লেনের বাকলিয়া এক্সেস রোড নির্মাণকাজে গতি ফিরেছে। ২০১৬ সালে নেওয়া প্রকল্প ২০১৭ সালে শুরু করলে শুধু ১০০ মিটার সড়কের জন্য শুরু হয় জটিলতা। প্রকল্প এলাকার ৪১৭ দশমিক ৫০ কাঠা জমি অধিগ্রহণ করলেও ‘বাবে ইউসুফ’ নামে একটি ১০ তলা ভবন অধিগ্রহণ করতে না পারায় পিছিয়ে পড়ে প্রকল্পের কাজ। বনিবনার একপর্যায়ে পরিকল্পনা পাল্টালো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ২০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার একটি চার লেনের একটি সড়কের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ সড়কের দুই পাশে থাকার কথা ড্রেন, ৪টি বক্স কালভার্ট, ১০ ক্রস কালভার্ট এবং বসানোর কথা ২০০টি স্ট্রিট লাইট। সবই হয়েছে আনুমানিক ২০১৯ সালে। তবে বাকি ছিলো ১০০ মিটারের একটি সড়ক। যার কারণ হলো- ‘বাবে ইউসুফ’ নামের একটি ভবন। এ ভবনটি সিডিএর অনুমতি নিয়েই নির্মাণ করে হাজী চাঁন্দমিয়া সওদাগর ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ফলে বেকায়দায় পড়ে সিডিএ। পরে ভবন মালিকপক্ষকে ১৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয় সংস্থাটি। তবে ক্ষতিপূরণের লেনদেনের আগে সমালোচনা শুরু হলে গঠন করা হয় একটি তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে কেটে যায় আরো চার বছর। প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে আরও ১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ বলেন, ‘২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু আরো আগে বাকলিয়া ডিসি রোডে মৌসুমী আবাসিক এলাকায় সিডিএ’র অনুমোদন নিয়ে নির্মিত ১০তলা একটি ভবনে আটকে যায় সড়কটির কাজ। সিডিএ অ্যালাইনমেন্ট কিছুটা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সড়কের কাজ শেষ করা হচ্ছে।’
অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন প্রসঙ্গে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিকল্পনাবিদ ও প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘এ অ্যালাইনমেন্টের পরিবর্তন করার জন্য একটা তদন্ত কমিটি হয়েছে। তারপর তাদের রিপোর্টটা মন্ত্রণালয় থেকে পাস হওয়ার পর চুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল পর্যালোচনা করে। এতে আমাদের ১৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়, যা আমরা ওই ১০তলা ভবন মালিককে দিতে চেয়েছিলাম। সব মিলিয়ে আমরা সাশ্রয় করে প্রকল্পটি শেষ করছি। এখন রাস্তাটির শেষ পর্যায়ের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হলে বিউটিফিকেশনের কাজ করা হবে। যা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি, এ মাসের শেষে আমরা রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবো।’
এ সড়কে আরও কিছু বাইপাস সড়ক সংযুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ সড়কটি শেষ হলে প্রায় ২ লাখের বেশি মানুষ এ সড়কে চলাচল করতে পারবে। বাকলিয়া এক্সেস রোডে আরও কিছু বাইপাস সড়ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে কর্ণফুলী সেতু ও বহদ্দারহাটের মাঝে একটি বাইপাস সড়ক করা গেলে মূল শহরের দক্ষিণমুখী মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো গতিশীল হবে।’