নিজস্ব প্রতিবেদক »
শাহাদাতে কারবালা মাহফিল নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে। ৩৬ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এই মাহফিল আগের নিয়মে এবারও জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হবে। মাহফিল হবে ১০দিন ব্যাপী। ইতোমধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মৌখিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন এবং লিখিত অনুমোদনও শিগগিরই পাওয়া যাবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। ৩৬ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এই মাহফিল এবার এখানে অনুষ্ঠানের অনুমতি প্রথমে না দেয়ায় সমালোচিত হন ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক।
গতকাল অনুমোদনের কথা স্বীকার করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক তৌহিদুল আনোয়ার বলেন,‘ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয় আমাদের মন্ত্রী মহোদয়কে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল আগের নিয়মে করতে অনুমোদন দিতে অনুরোধ করেছেন। সেই অনুযায়ী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক টেলিফোনে আমাকে জানিয়েছেন অনুমোদনের বিষয়টি। তবে লিখিত অনুমোদন এখনো পাওয়া যায়নি। মাহফিল উদযাপন পরিষদের আবেদন ইতিমধ্যে মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই বোর্ড সভায় তা অনুমোদন হয়ে যাবে। মাহফিল উদযাপন নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই।’
এতোদিন সমস্যা কোথায় ছিল?
তৌহিদুল আনোয়ার নিজেই স্বীকার করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের সূচনা করেছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য ও জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আল কাদেরী। তাই এটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনেরও প্রোগাম। তাহলে এর অনুমোদন নিয়ে বিপত্তি কেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদুল আনোয়ার বলেন,‘ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে গত বছরের জুলাই মাসে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্স ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করে। সেই নীতিমালায় মসজিদের দ্বিতীয় তর্লা বারান্দায় সকল প্রকার অনুষ্ঠান বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। আর এই মাহফিল সেই বারান্দায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল বলে এবার তা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল।’
এবিষয়ে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন,‘ আমাদের এই মাহফিলে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ থেকে ১২ জন আলেম এসে থাকেন। তাদের নিরাপত্তা এবং নামাজের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা এই মাহফিল বারান্দায় করে আসছি এতো বছর ধরে। কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বলা হচ্ছিল মাঠে আয়োজনের কথা। এতেই বিপত্তি দেখা দেয়।’
শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের একাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, মহররম নিয়ে যখন এই শহরের মানুষ তাজিয়া মিছিলে সীমাবদ্ধ ছির এবং ধর্মীয় সঠিক নির্দেশনা পেতো না, তখন মাওলানা জালাল উদ্দিন আল কাদেরি এই মাহফিলের আয়োজন করেন ১৯৮৬ সালে। তখন থেকে চলে আসা এই মাহফিলে দেশের বরেণ্য ইসলামী ব্যক্তিত্বরা নিয়মিত আসতেন। আর গত ১৫ বছর ধরে মিশরের আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েত, কানাডা, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইসলামী চিন্তাবিদগন এই মাহফিলে আসতে থাকেন। তারা মহররমের তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করেন এই শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে।