আতঙ্কে স্থানীয়রা
নিজস্ব প্রতিনিধি, উখিয়া
উখিয়ার বৃহত্তম রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালংয়ে রাতভর গোলাগুলি, সংঘর্ষে ২ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন ডি ৫ ব্লকের মৃত সৈয়দ আলমের ছেলে ইমাম শরীফ (৩২) ও ডি ২ ব্লকের মৃত ইউনুসের ছেলে শামসুল আলম (৪৫)।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘর্ষের জের ধরে এ হত্যাকা-ের ঘটনাটি ঘটেছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে উখিয়া থানা পুলিশ ক্যাম্প-২ ওয়েস্ট ডি ৫ ব্লক থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহত রোহিঙ্গার স্বজন আবু তালেব ও আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ক্যাম্পে মুন্না গ্রুপ ও আলেকিন নামের একটি সংগঠন ক্যাম্পে গণহারে চাঁদাবাজি করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। চাঁদা না দিলে তারা অপহরণপূর্বক মারধর করে টাকা আদায় করে থাকে। এ নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিল। গত শুক্রবার রাতভর দফায় দফায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ১০ জন ঘটনাস্থলে আহত হন। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার দিবাগত রাতে ফের ঘটনার সূত্রপাত হয়। এসময় রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে বেশ কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলির ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় এমএসএফ ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহমদ জানান, নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে গ্রুপিং চলছে। তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিয়মিত কথা কাটাকাটি, হাতাহাতি, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া চিরাচরিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন কোনভাবেই তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে এখানে লাশের সারি আরো দীর্ঘায়িত হতে পারে।
ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান জানান, ইয়াবা পাচার ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ হত্যাকা- ঘটতে পারে। তবে কি জন্য দুই রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা নেই।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ জানান, এ ব্যাপারে দুটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভিতরে ও আশেপাশে বসবাসরত জাফর আলম, মো. শফি, রিয়াজুল হক, সিরাজুল হকসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী অভিযোগ করে জানান, রোহিঙ্গারা কথায় কথায় দা, কিরিচ, বন্দুক নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালায়। গত রাতে গোলাগুলির আওয়াজে তারা ঘুমাতে পারেনি। আতঙ্কে রাতযাপন করতে হচ্ছে। যা স্থানীয়দের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।