নিজস্ব প্রতিবেদক»
রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্টকার্ড প্রদানের মাধ্যমে পাসপোর্ট পেতে সহায়তা করায় এবার ১৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই ১৭ আসামির মধ্যে ১৩ জন রোহিঙ্গা, তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন নির্বাচন কর্মকর্তা রয়েছেন। গতকাল এই মামলা দায়ের করেছেন দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। গত কয়েকদিন ধরে এনআইডি জালিয়াতি নিয়ে মামলা দায়েরের পর থেকে দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার ধারাবাহিকতায় এবার আসামি করা হয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সাবেক পরিদর্শক এস এম মিজানুর রহমান, মো. রুহুল আমিন ও প্রভাষ চন্দ্র ধর এবং কক্সবাজারের সাবেক জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও বর্তমানে কুমিল্লার অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন। এছাড়া ১৩ রোহিঙ্গা আসামি হলেন, মো. তৈয়ব, মোহাম্মদ ওয়ারেস, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ রহিম, আব্দুর রহমান, আব্দুস শাকুর, নুর হাবিবা, আমাতুর রহিম, আসমাউল হুসনা, আমাতুর রহমান, নুর হামিদা, মোহাম্মদ আহমদ ও হাফেজ নুরুল আলম।মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এরা সকলে কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডেরমৃত জালাল আহমেদের পরিবারের সদস্য হিসেবে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পরিচয়পত্র এবং স্মার্টকার্ড নিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তও হয়েছিলেন। অভিযুক্ত ১৩ জনের সকলে একই পরিবারের (তৈয়বসহ ৯ ভাই, ২ বোন ও তৈয়বের স্ত্রী) সদস্য। এরা মিয়ানমার থেকে এসে সরকারি খাস জমি দখল করে পাঁচজন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ওমরা ভিসার মাধ্যমে সৌদিআরব চলে যান।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, এই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধভাবে বসবাসরতদের মধ্যে দুশজনেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের নাগরিক হয়েও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতায় জাতীয়তা সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি), স্মার্টকার্ড, ভূমিহীন প্রত্যয়নপত্র, স্কুলের প্রত্যয়নপত্র পেয়েছেন এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনবিহীন একটি ল্যাপটপ থেকে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পাসপোর্টের আবেদন করা হলেও সেটা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে যথেষ্ট যাচাই বাছাই না করেই প্রত্যয়ন করা হয়েছে।
এবিষয়ে মামলার বাদিদুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপ সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘এনআইডি জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা এবং তাদের পাসপোর্ট প্রদানের কারণে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেহেতু পাসপোর্ট আবেদন করে প্রত্যয়ন করে পুলিশের বিশেষ শাখা তাই তাদেরও আসামি করা হলো।’
উল্লেখ্য, এনআইডি নিয়ে গত তিনদিনে ছয়টি মামলা হয়েছে। এতে নির্বাচন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সর্বশেষ পুলিশও অভিযুক্ত হলো।