চট্টগ্রাম বন্দর
আরও দুই কন্টেইনার জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক »
মদে ভাসছে চট্টগ্রাম বন্দর। মূলত: রাজস্ব ফাঁকি দিতে মিথ্যা ঘোষণায় এসব মদ আসছে। আর মদের চালানের সাথে সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় রয়েছে। গতকাল আটক করা হয়েছে দুই কন্টেইনার মদ।
গত কয়েক দিনে পাঁচ কন্টেইনার মদের চালান আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে এভাবে মদ আসার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার কথা।
দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বন্দরে চিফ প্ল্যানিং হিসেবে কাজ করা হাদী হোসেন বাবুল বলেন, ‘রাজস্ব ফাঁকি দিতে যে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মদ আনা হচ্ছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন হলো কনটেইনারগুলো স্ক্যানিং হওয়ার সময় শনাক্ত হয়নি কেন? নিশ্চয়ই এর সাথে একটি চক্র জড়িত রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর শুধু বাহক মাত্র। জাহাজে করে কনটেইনার আসে এবং সেই কনটেইনার চলে যায়। কিন্তু এই কন্টেইনারে কি আছে, বৈধ না অবৈধ, রাজস্ব ফাঁকি হলো কি হলো না? এগুলো দেখার দায়িত্ব কাস্টমস কর্তৃপক্ষের।
হাদী হোসেন বাবুলের সাথে একমত পোষণ করে কাস্টমস’র উপ-পরিচালক এ কে এম সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘অবশ্যই অবৈধভাবে এসব পণ্য আসার পেছনে একটি সিন্ডিকেট জড়িত। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে একই সিএন্ডএফ নাম ব্যবহার করা হয়েছে। মদের রাজস্ব বেশি বলে তা ফাঁকি দিতেই মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে চক্রটি অবৈধভাবে এগুলো আনছে। তবে এখনই চূড়ান্ত করে কিছু বলা যাচ্ছে না, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।’
এদিকে গতকাল কাস্টমস এ আটক হওয়া দুই কন্টেইনার মদের চালানের একটি কনটেইনার ছিল নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের নামে। প্রতিষ্ঠানটি কাচামাল পলিপ্রোপালিন আনাফ ঘোষণা দিয়ে চীন থেকে এক কন্টেইনার মদ নিয়ে আসে। গত ১২ জুলাই কন্টেইনারটি বন্দরে আসে। এছাড়া মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এর নামে সুতা আমদানির পরিবর্তে অপর কন্টেইনারেও মদ ছিল। উভয় চালানে সিএন্ডএফ এজেন্ট ছিল জাফর আহমেদ। এর আগে গত রোববার জব্দ হওয়া দুই কনটেইনার মদও নীলফামারী ইপিজেডের নামে এসেছি। এবিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে কাস্টমস’র এক কর্মকর্তা জানান, ইপিজেডের নামে কন্টেইনার আনা হলে তুলনামূলকভাবে কম চেক করা হয়। তাই জালিয়াতি চক্রটি ইপিজেডের নাম ব্যবহার করেছে।
এদিকে মদের চালানগুলো আটক করা প্রসঙ্গে কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার ডেপুটি কমিশনার সাইফুল হক বলেন, ‘মদের এসব চালান আনতে সব ধরনের কাগজপত্র জাল করা হয়েছে। হয়তো আরো কিছু কনটেইনারেও মদ পাওয়া যেতে পারে।’
উল্লেখ্য, বৈধ পথে মদ আনতে শুল্ক বেশি দিতে হয়। মিথ্যা ঘোষণায় মদ আনা গেলে আমদানিকারক লাভবান হয়ে থাকে।