নিজস্ব প্রতিনিধি, হাটহাজারী »
নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মহিউদ্দিনকে (৪৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব ৭।
গতকাল শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর চান্দগাঁও এলাকার সুবর্ণ আবাসিক থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি হাটহাজারী উপজেলার মন্দাকিনি এলাকার এলাহী বক্সের পুত্র।
২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর নগরীর জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীকে (৬০) বাসায় ঢুকে তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। তার স্ত্রী রেলওয়ের তৎকালীন অডিট কর্মকর্তা উমা মুহুরী সেদিনই চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০০৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১২ আসামির মধ্যে ৪ জনকে ফাঁসির ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে আদালত আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
র্যাব-৭ কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন- সাজা হওয়ার ১৮ বছর পরও মহিউদ্দিন পলাতক ছিল। অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যা মামলার বিচার শেষে নাসির ওরফে গিট্টু নাসির, আজম, আলমগীর ও মন্টুকে মৃত্যুদণ্ড দেয় জজ আদালত।
এছাড়া মহিউদ্দিন ওরফে মহিনউদ্দিন, হাবিব খান, সাইফুল ওরফে ছোট সাইফুল ও শাহাজাহানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় রায়ে।
বিচারিক আদালতের ওই রায়ের পর মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিরাও আপিল করেন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া গিট্টু নাসির ২০০৫ সালের ২ মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মারা যান যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছোট সাইফুলও।
হাইকোর্ট শুনানি শেষে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০০৬ সালের ১৯ জুলাই রায় দেন। সেই রায়ে যাবজ্জীবন সাজার আসামি শাহাজাহান ও সাইফুল ওরফে ছোটো সাইফুল খালাস পান। অন্যদের সাজা বহাল থাকে।
এরপর মৃত্যদণ্ডের তিন আসামির মধ্যে আলমগীর কবির খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে আপিল করেন। আর তসলিম উদ্দীন ওরফে মন্টু, মোহাম্মদ আজম আপিল করেন হাইকোর্টে।
গত বছরের ৬ অক্টোবর আপিলের শুনানি করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে চূড়ান্ত রায় দেন। রায়ে সর্বোচ্চ আদালত আপিল খারিজের পাশাপাশি সাজা সংশোধন করে আসামিদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন তিন আসামিকে। এই তিন আসামি হলেন তসলিম উদ্দীন ওরফে মন্টু, মোহাম্মদ আজম ও আলমগীর কবির ওরফে বাইট্টা আলমগীর।