যাত্রীশূন্য ঘাট, চলছে ধর্মঘট

নিজস্ব প্রতিবেদক »
এপার-ওপার কোন ঘাটে যাত্রী-মাঝি কেউ নেই। উত্তর পাড়ে সাম্পানের দেখা না মিললেও দক্ষিণ পাড়ে সারিবদ্ধ হয়ে খালি রয়েছে শত শত সাম্পান। দুই একজন মাঝি যাত্রীবিহীন নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। একদল মাঝি ঘাটে বসে তাদের চলমান ধর্মঘট নিয়ে আলোচনা করছেন।
গতকাল বিকেলে কর্ণফুলীর বাংলাবাজার ও ইছানগর ঘাটের এমন চিত্র দেখা যায়।
অন্যান্য ঘাটে যাত্রী পারাপারে ইজারাদাররা এক টাকা করে আদায় করলেও বাংলাবাজার ঘাটে পাঁচ টাকা করে আদায় করায় বাংলাবাজার ও ইছানগর ঘাটের সাম্পানওয়ালারা ধর্মঘট করছেন গত ছয় দিন ধরে। এ বিষয়টির কোন সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম ইছানগর বাংলাবাজারঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, এই দুইটি ঘাটে সাম্পান চলাচল করে ২১০টি। ৩শ’ ৫০ জন মাঝির জীবন জীবিকা এই ঘাটের উপর নির্ভরশীল। তবে নিবন্ধিত মাঝি আছে ২১৩ জন।
ইছানগর ঘাটে আন্দোলনরত মাঝিরা বলেন, ‘আমাদের এই ধর্মঘট শুধু মাঝিদের জন্য নয়, যাত্রীদের কল্যাণের জন্যও। এক টাকার বদলে পাঁচ টাকা নিলে যাত্রীদের সাম্পান ভাড়াও যায়। এই ঘাট দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষদের পাশাপাশি বিভিন্ন কলকারাখানার শ্রমিক, বিভিন্ন জাহাজ-ট্রলার কর্মচারী ও শত শত ছাত্র পার হয়।’
এদিকে এই ধর্মঘটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। সদরঘাটসহ অন্যান্য ঘাট দিয়ে পার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। কর্ণফুলী ঘাটে মো. কাশেমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আগ্রাবাদ যেতে হয়। ইছানগর ঘাট বাংলাবাজার ঘাট দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করি। এখন ওই ঘাটে যাত্রী পারাপার বন্ধ। বাড়তি রিকশা ভাড়া দিয়ে সদরঘাট দিয়ে পার হতে হচ্ছে। এই সমস্যাটি তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে গেলে যাত্রী ও মাঝি সবার জন্য ভালো।’
চট্টগ্রাম ইছানগর বাংলাবাজারঘাট সাম্পান মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মাঝি মো. জামাল ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন, ঘাটগুলো সাম্পান মাঝিদের ইজারা না দিয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের ইজারা দেয়া হয়। বৈঠা যার, ঘাট তার সরকার প্রবর্তিত এই আইন মানা হয় না। ফলে আমাদের মতো পেশাদার মাঝিদের কষ্ট হয়।
ওই সংগঠনের সভাপতি লোকমান দয়াল জানায়, করোনার কারণে অনেক দিন সাম্পান চলাাচল বন্ধ ছিল। লকডাউন খোলার পর চাঁদাবাজদের কারণে বন্ধ রাখতে হলো। এত মাঝিদের জীবন চালাতে কষ্ট হচ্ছে। দুই বার সিটি করপোরেশনের সাথে বৈঠকে বসেছি। কিন্তু কোনো সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছি। পাঁচ মাস আগে ইজারার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখনো ইজারা দেয়া হয়নি। ইজারা ছাড়াই দুই টাকার পরিবর্তে পাঁচ টাকা নেয়া হচ্ছে।