মেলা মুক্ত খেলার মাঠ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। এই প্রাণের দাবি কোনভাবেই পূরণ হচ্ছিলো না। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাম্প্রতিক উদ্যোগ আশাহত নগরবাসীর মনে এক চিলতে প্রশান্তি এনে দিয়েছে। প্রথম উদ্যোগ হিসেবে ইতোমধ্যে আউটার স্টেডিয়াম দখলমুক্ত হয়েছে। খেলার জন্য বিশেষায়িতভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে। এই মাঠের ব্যাপারে বেশ শক্ত অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। অতি সম্প্রতি একটি বড় রাজনৈতিক দল সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করে ফেললেও সেটি সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয় এবং খেলার মাঠে কোন সমাবেশও করতে দেয়া হয়নি। আমরা চাই প্রশাসনের এই দৃঢ়তা অব্যাহত থাকুক।
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় খেলার মাঠ পলোগ্রাউন্ড। অনেক বছর ধরেই খেলার বদলে মেলার স্থায়ী ভেন্যুতে রূপান্তরিত করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পলোগ্রাউন্ড। একসময় নানা বয়সের ক্রীড়াবিদদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো এই মাঠ। ফুটবল-ক্রিকেট থেকে শুরু করে অ্যাথলেটিকসের নানা আয়োজন এখানে ধারাবাহিকভাবে লেগে থাকতো। খেলাধুলাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে এবং মাঠের বারোটা বাজিয়ে এখন এখানে হয় ধারাবাহিক মেগা মেলার অপ্রয়োজনীয় আয়োজন।
পলোগ্রাউন্ড মাঠে মেলা বন্ধে সুপারিশ করেছে রেল মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। মাঠটির মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল)। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সংসদীয় কমিটির ২৫তম সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২২ জুন) জেলা প্রশাসন আয়োজিত বঙ্গবন্ধু আন্তঃ কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেল মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ক্রীড়া পাগল একজন মানুষ। তিনি চান দেশের ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করুক। তার আমলে যদি এই পলোগ্রান্ডের মতো ঐতিহ্যবাহী মাঠকে খেলার মাঠে পরিণত করা না যায় তাহলে সেটা হবে আমাদের হতাশার। তিনি শীঘ্রই এই মাঠটাকে ঘিরে একটি মহা পরিকল্পনা প্রণয়নের অনুরোধ জানান। যাতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মাঠটি আবার খেলোয়াড়দের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি। তিনি জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে বলে, আপনি যে কাজ শুরু করেছেন তা বেশ প্রশংসনীয়। আপনি এগিয়ে যান আমি সব সময় সাথে থাকব। তরুণ সমাজকে অবশ্যই খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। আর সে জন্য পলোগ্রাউন্ড মাঠকে পুরোপুরি খেলাধুলার উপযোগী করে গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। আর সে জরুরি কাজটি আমরা জরুরী ভিত্তিতেই করতে চাই।
পলোগ্রাউন্ড মাঠের চারপাশে অ্যাথলেটিক ট্র্যাক করার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম সংলগ্ন মাঠের একাংশকে কেবলই মহিলাদের জন্য পৃথক একটি মাঠে পরিণত করতে চান তিনি। এখন এই শহরের সবগুলো খেলার মাঠকে পুনরায় খেলাধুলার কাজে ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করার সময় চলে এসেছে। সবাইকে মিলে এই কাজটি আমাদের করতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ