বেড়েছে যানজট
নিজস্ব প্রতিবেদক »
মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পর সরব হয়েছে নগরীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গন। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় স্কুল আঙ্গিনা ষোলকলায় পূর্ণতা পেয়েছে। একই সাথে সড়কেও বেড়েছে যানজট।
গতকাল বুধবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন অলি-গলি পাড়া মহল্লায় দেখা গেছে, মুখে নতুন মাস্ক, কাঁধে স্কুল ব্যাগ। নতুন কাপড়ের গন্ধ ভেসে আসছে স্কুল ড্রেস থেকে। নতুনের সমাহার নিয়ে স্কুলপথে ছুটছে শিক্ষার্থীরা। আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রঙ বেরঙ্গের স্কুল পোশাকে স্কুল ফটকে অভ্যর্থনায় ভাসছে তারা। রয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে বা হাত ধুয়ে স্কুল আঙ্গিনায় পা রেখেছে সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি মানতেও অনীহা নেই তাদের। ক্লাস চলবে সপ্তাহে ছয়দিন। এসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে অভিভাবকদের ভীড় দেখা যায়। স্কুল খুলে দেওয়ায় অভিভাবকেরাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।
এসময় অভিভাবক আরমান বলেন, ‘স্কুল খুলে দেওয়ায় পাঠে শিক্ষার্থীদের মনোনীবেশ হবে। শিক্ষার মানও উন্নত হবে। শ্রেণী কক্ষে বসে শিক্ষকের পাঠ নেওয়া শিক্ষা ও অনলাইন শিক্ষার মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। নীতি নৈতিকতা শিখতে শ্রেণী কক্ষের বিকল্প নেই।’
কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সানজিদা মোক্তার তানজিন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় শ্রেণী কার্যক্রমের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে এর সংখ্যা বাড়বে।’
এদিকে নগরীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কারণে সড়ক পরিবহনে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় ভোর বেলায় নগরীর বিভিন্ন মোড়ে অফিসগামীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। কিন্তু সেই চিত্রের পরিবর্তন এসেছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যদিও নগরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দশটি শিক্ষার্থী বাস চালু রয়েছে। যার ফলে আগের তুলনায় অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
পরিবহনে যাত্রী বাড়ার সাথে সাথে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটও বেড়েছে। বেলা বাড়তেই নগরীর জামালখান মোড়, দামপাড়া, আগ্রাবাদ এলাকায় দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। এদিকে শীত কমে উষ্ণতা বাড়ায় দীর্ঘ যানজটের মধ্যে গরমে শিক্ষার্থীদের কষ্ট বেড়ে গেছে।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘স্কুল খোলার সাথে সাথে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে গরমও। স্কুল ছুটির সময়ে পরিবহনে বেশি ভীড় হচ্ছে। তবে স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের মানোন্নয়ন হবে।’
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ ৫৪৩ দিন পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। নতুন বছরের আগমনে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ২১ জানুয়ারি আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধের ঘেষণা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। করোনা শনাক্তের হার কমে আসায় ২২ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক স্কুলের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয়। বুধবার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও সশরীরে উপস্থিতিতে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সপ্তাহে ছয়দিন ক্লাস চলবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরিচালনার জন্য দুই শিফটে ক্লাস চলবে।’