নিজস্ব প্রতিনিধি, মহালছড়ি »
ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠান । গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সরকার তৃণমূল পর্যায়ে জনসাধারণকে ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানের লক্ষে সারা দেশে পর্যায়ক্রমে ইউনিয়নসমূহে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
অথচ খাগড়াছড়ির জেলার মহালছড়ি উপজেলার আওতাধীন ৪ টি ইউনিয়নে কোনটাতে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন না থাকায় ইউপি চেয়ারম্যানগণ পুরনো টিনশেড আধাপাকা ঘরে দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করছেন। মহালছড়ি উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মহালছড়ি উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন। ইউনিয়নগুলো হলো মহালছড়ি সদর ইউনিয়ন, মুবাছড়ি ইউনিয়ন, মাইসছড়ি ইউনিয়ন, ক্যায়াংঘাট ইউনিয়ন। ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৩টিতে টিনশেড আধাপাকা ঘর থাকলেও ক্যায়াংঘাট ইউনিয়নে তাও নেই।
এ বিষয়ে ক্যায়াংঘাট ইউনিয়ন পরিষদে ২ বারের জন্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চাকমা বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত ক্যায়াংঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ঘরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। এ যাবত মাইসছড়ি বাজারে ১টি ও ক্যায়াংঘাট গ্রামে ১টি ঘর ভাড়া নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি। কমপ্লেক্স ভবন না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বিশ্বজিত বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নামে জায়গা বন্দোবস্তি না থাকায় কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না।
ইউনিয়নের জন্য কেউ জমি দাতা থাকলেও নাম পরিবর্তনের কাজ গুছিয়ে আনতে দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। সে কারণে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ বিলম্ব হচ্ছে। মাইসছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাজাই মারমা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ বিষয়ে বলেন, মাইসছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ এর নামে ৮০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে এবং ভবনের জন্য মন্ত্রণালয়ে কাগজ পত্র পাঠানো হয়েছে।
মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি রতন কুমার শীলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মহালছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদটি অতি পুরনো। ১৯০৫ সাল থেকেই এ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে এখনো সেই পুরনো টিনশেড ঘরে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা করতে হচ্ছে। কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ বিষয়ে চেয়ারম্যান রতন শীল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের জায়গাটি উপজেলা পরিষদের জায়গার সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যার কারণে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। উপজেলা পরিষদের সাথে বোঝাপড়া করেই জমি সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে হবে।
তারপর কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ সম্ভব হবে। একই সমস্যা নিয়ে মুবাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পী খীসা বলেন, জায়গা সংক্রান্ত জটিলতায় কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। তবে ভূমি জটিলতা নিরসন হওয়ার পথে। ভুমি জটিলতা নিরসন হলে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হবে। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের নামে নিজস্ব জায়গা না থাকা, জনপ্রতিনিধিদের জোর তৎপরতা না থাকায় কমপ্লেক্স ভবন না হওয়ার মূল কারণ মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবাইদা আক্তার বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখেছি জায়গা স্বল্পতার কারণে কমপ্লেক্স ভবন করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠাবো। যেভাবেই হোক দ্রুত কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবো।