সুপ্রভাত ডেস্ক :
ভারতের হিমাচল প্রদেশের পার্বতী নদীর তীরে কসোল গ্রামটি অবস্থিত। সেখানকার মনোরম পরিবেশ যে কাউকেই কাছে টেনে নেয়। আর এই গ্রামেই পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। তবে কেন, গ্রামটিতে পুরুষ ঢুকতে পারেন না? হিমাচল প্রদেশের কসোল গ্রামটি সবসময়ই বিদেশি পর্যটকবান্ধব। তবে গ্রামটিতে অন্য রাজ্য থেকে আসা কোনো ভারতীয় পুরুষদের অনুমতি নেই। এছাড়াও সেখানকার স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, বিদেশি পর্যটক আসায় তাদের কাছে অনেক বেশি লাভদায়ক। এছাড়া একবার কিছু ভারতীয় পুরুষরা এই গ্রামে বেড়াতে এসে বিদেশি নারীদের উত্যক্ত করায় নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেই থেকে এই গ্রামে পুরুষ ঢুকতে পারে না।
কসোলে প্রবেশ করলেই আপনার মনে হবে কোনো ইসরায়েলি গ্রামে রয়েছেন। জানেন কি? ভারতের এই ছোট্ট গ্রামটিই পরিচিত মিনি ইসরায়েল নামে। সেখানকার খাবার থেকে শুরু করে যাবতীয় কোনো কিছুতেই ভারতীয়দের ছোঁয়া নেই। সবকিছুই ইসরায়েলিদের নিয়মেই চলে সেখানে। কারণ এই গ্রামের সব পর্যটকই ইসরায়েলি। হিমাচলের অন্যান্য পর্যটন স্থানের মতো কসোলেও ভিড় খুব কম। সুতরাং, আপনি এখানে শান্তিতে প্রকৃতির নৈসর্গ দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। যুবক যুবতীদের ঘোরাঘুরি করার জন্য এই জায়গাটি খুবই সুন্দর ও মনমুগ্ধকর।
এই গ্রামে আগে কেবলমাত্র একটি বাস স্টপ ছিল। তবে জনবসতি ছিল না। এরপর ধীরে ধীরে এখানে বসতি স্থাপন হতে শুরু করে। ২০১৪ সাল থেকে অ্যাডভেঞ্চারের পর্যটকরা এখানে আসতে শুরু করেন। কোনো এক সময় ইজরায়েলের কিছু ভ্রমণকারী বেড়াতে এসে এই স্থানটির প্রেমে পড়ে যায়। তারা স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে লিজে কিছু জমি নিয়ে নিজেদের দেশীয় কায়দায় কয়েকটি কটেজ ও ক্যাফে তৈরি করে। স্থানীয় মানুষদের ভালো বেতনে কাজে নিয়োগ করে তাদেরকে ইসরায়েলি রান্না-বান্না থেকে সাধারণ জীবনযাত্রা সবকিছু শিখিয়ে নেয়।
এর পেছনে কারণ হচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিটি ছেলে-মেয়েকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এই কঠিন প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে এখানে পাঠানো হয় কিছুদিন বিনোদনের মধ্যে কাটানোর জন্য। ক্রমে এই ছোট্ট পাড়াটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আরো কিছু কটেজ, ক্যাফে ও পাব তৈরি করে একটা পূর্ণাঙ্গ ট্যুরিস্ট স্পটে পরিণত করে।
পার্বতী নদীর তীরের এই কসোল গ্রামটি বর্ধিত হয়ে নদীর দুই পাড়ে ছড়িয়ে গেছে। এক পাড়ে পুরনো কসোল অন্য পাড়ে নতুন কসোল। স্থানটি এখন ছোটখাট টাউনে পরিণত হয়েছে। এদিক ওদিক কয়েকটি ইসরায়েলি পতাকাও চোখে পড়বে। মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট, এটিএম, দোকানপাট সবই পাওয়া যাবে। যদি এটিএমে টাকা না পাওয়া যায় চিন্তার কিছু নেই। কারণ কসোলের একপাশে রয়েছে বিখ্যাত মালানা ভ্যালি টাউন আর অন্য পাশে বিখ্যাত মণিকরণ ভ্যালি টাউন। এসব স্থানে অনেক এটিএম বুথ পাওয়া যাবে। কসোল আর মণিকরণের দুরত্ব মোটামুটি তিন কিলোমিটারের মতো।
কসোল যাওয়ার উপায়
সোজা দিল্লি চলে যান। অতঃপর দিল্লির কাশ্মীরি গেট থেকে বাস পাবেন একেবারে কসোল পর্যন্ত। অপরূপ সৌন্দর্যের এই গ্রামে ঢুকতে সময় লাগবে ১৪ ঘণ্টার মতো। এরপর প্রাকৃতিক নৈস্বর্গীক স্বাদ উপভোগ করুন। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি