ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে খুলনা থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কোথাও খুঁটি উপড়ে পড়েছে, আবার কোথাও বিতরণ লাইন ছিঁড়ে সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘিœত হওয়ায় মেরামত প্রক্রিয়া সময় লাগবে বলে আভাস দিয়েছেন বিদ্যুৎকর্মীরা।
পিজিসিবির নিয়মিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুক্রবার বিকাল ৫টায় সারাদেশে ৪ হাজার ৭৮৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছিল। আগের দিন একই সময়ে বিদ্যুতের ব্যবহার ছিল ১০ হাজার ২৯১ মেগাওয়াট। অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় দেশের মোট চাহিদা ৫৩ শতাংশ কমে যায়। ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে শুক্রবার বেলা ১টার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। পরের দুই ঘণ্টায় বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে বেলা ৩টার দিকে তা পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসে।
চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ ও সীতাকু- এই দুই উপজেলায় শনিবার পর্যন্ত অধিকাংশ এলাকা ছিল বিদ্যুৎহীন। এতে দুর্ভোগে পড়েন দুই উপজেলার অন্তত ৭০ হাজার গ্রাহক। এর আগে গত শুক্রবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
ঝোড়ো হাওয়ায় নোয়াখালি উপকূলীয় এলাকায় ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে ১৭২টি স্থানে। অনেক স্থানে শনিবার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। নোয়াখালী অঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ১৬ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন রয়েছে যার অধিকাংশই বন্ধ। অনেক এলাকায় খুঁটি পড়ে গেছে, অনেক জায়গায় একটি-দুটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে কয়েক কিলোমিটার বিতরণ লাইন অকেজো হয়েছে।
শুধু চট্টগ্রামে কিংবা এর আশেপাশে এলাকায় নয় মিধিলির কারণে আরও বেশ কয়েকটি জেলায় তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, সেটি খুব আশাব্যঞ্জক। তবে এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। যে কারণে সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা দেয় বারবার। এবং সামান্য ঝড়বৃষ্টিতেও খুঁটি উপড়ে পড়ে সঞ্চালনে বিঘœ ঘটে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি ঘটাতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ