সুপ্রভাত ডেস্ক
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জনগণের ওপর বিএনপির কোনো আস্থা নেই। সে জন্যই জনগণের দিকে না তাকিয়ে বিএনপি এখন কাকের মতো দূর দেশ থেকে কে কি বললো সেদিকে তাকিয়ে থাকে। কাক যেমন কখন কে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেললো সেদিকে তাকিয়ে থাকে মির্জা ফখরুল সাহেবরাও তেমন পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে আছে।’
গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যে মনে হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান যেমন ইসরাইলকে সাহস যোগাচ্ছে, বিএনপিকেও সাহস যোগাচ্ছে- দুটোর মধ্যে মিল আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিএনপির আন্দোলনে কেউ সমর্থন জানায়নি, তাদের তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকারের দাবির প্রতিও কেউ সমর্থন জানায়নি।’
বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান বিএনপির আন্দোলনে সাহস যোগাচ্ছে’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান স্পষ্টত ইসরাইলকে সাহস যোগাচ্ছে এবং ইউরোপের যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া এমন কি অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কোনো মিছিল-সমাবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে অর্থাৎ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হয়েছে। অর্থাৎ পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান একদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ইসরাইলকে সাহস যোগাচ্ছে আরেক দিকে মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন তাদেরকেও সাহস যোগাচ্ছে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনে কারো সমর্থন নেই।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এগুলো বলে তাদের কর্মীদের একটু চাঙা রাখার চেষ্টা করছেন মাত্র।’
নির্বাচনের আগে সংলাপের জন্য বিদেশি পরামর্শ প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের শক্তিতে বলীয়ান, জনগণই এ দেশের মালিক, জনগণই নির্ধারণ করবে কারা দেশ পরিচালনা করবে, কারা দেশ পরিচালনা করবে না। বন্ধু রাষ্ট্রের যে কেউ যে কোন পরামর্শ দিতে পারে। দেশ আমাদের, দেশের মালিক জনগণ এবং দেশের জনগণ কি চায় সেটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা পরামর্শ দিতে পারে সে পরামর্শ গ্রহণ করবো কি করবো না সেটি আমাদের এখতিয়ার। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে হবে- বিএনপির এ সমস্ত শর্ত দিয়ে কখনো সংলাপ হতে পারে না।’
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা নাই। চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনকালে বর্তমান মন্ত্রিসভার পুরোটাই থাকবে নাকি সেটি ছোট কিম্বা বড় করবেন, সেটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।’
বৃহৎ শক্তির নাখোশের শংকায় নিশ্চুপ বিএনপি বর্বরতা ও ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে
ফিলিস্তিনের বিষয়ে বিএনপির নীরবতা নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইসরাইলে পাখি শিকার করার মতো করে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। যুদ্ধের কথা বলে পুরো গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি, বিদ্যুৎ সমস্ত কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। এমন কি হাসপাতালেও বোমাবর্ষণ করছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবেও এই বর্বরতা বন্ধের ব্যাপারে বক্তব্য রেখেছি এবং এটির সমালোচনা করে সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং জামাত যখন নির্বাচন আসে তখন কড়া মুসলমান হয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা বলে। অথচ আজকে যখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে সেটি নিয়ে তারা নিশ্চুপ। একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে, সে কারণে নিশ্চুপ থেকে বিএনপি প্রকৃতপক্ষে এই বর্বরতা, নির্মমতা, যুদ্ধাপরাধের পক্ষ নিয়েছে এবং ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে। দেশের জনগণ এদেরকে চিনে রাখবে।’