সুপ্রভাত ডেস্ক »
নানা পদেক্ষেপে বাণিজ্য ঘাটতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনতে পেরেছে বাংলাদেশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ঘাটতি কমেছে ৭৬ শতাংশ।
এই তিন মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৮১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৭৫৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থাৎ কমেছে ৫৭৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
একটি দেশের আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের মধ্যকার পার্থক্যকে বাণিজ্য ঘাটতি বলে। প্রতি তিন মাস অন্তর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। খবর বিডিনিউজ’র।
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এক হাজার ৪৭৪ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা আমদানি হয়। এর বিপরীতে রপ্তানি আয় আসে এক হাজার ২৯৩ কোটি ৩১ লাখ ডলার।
বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসার পেছনে ভূমিকা রেখেছে আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে প্রথম প্রান্তিকে নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ গত অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় কমেছে ১৮ শতাংশ, আর এলসি নিস্পত্তির পরিমাণ কমেছে ২৫ দশমিক ৪০ শতাংশ।
বাণিজ্য ঘাটতি কমায় চলতি হিসাব এখন উদ্বৃত্তে আছে। সেপ্টেম্বর শেষে উদ্বৃত্ত আছে ৮৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ঘাটতি ছিল ৩৬৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
এই হিসাবে আমদানি-রপ্তানি, বিনিয়োগ থেকে আয়, পর্যটন খাত, বাণিজ্য ঘাটতি, কাঁচামাল আমদানি, পণ্য ও সেবা বিনিময়, রেমিটেন্স, বৈদেশিক সহায়তা ইত্যাদি হিসাব করা হয়।
সাধারণভাবে চলতি হিসাবের মাধ্যমে দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝানো হয়। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে সাধারণত কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।
চলতি হিসাব ইতিবাচক থাকায় সেপ্টেম্বর শেষে সার্বিক ভারসাম্য হিসাবের ঘাটতির পরিমাণও কিছুটা কমেছে। সেপ্টেম্বর শেষে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৮৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার, এক বছর আগে যা ছিল ৩৩১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
লেনদেনের ভারসাম্যের হিসাব বলতে বিভিন্ন দিক থেকে বা বিভিন্ন হিসাবে একটি দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সরকারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য সকল দেশের নাগরিক, সরকার ও প্রতিষ্ঠানের যে লেনদেন হয় তার সামগ্রিক হিসাব বোঝায়।
তবে তিন দিক দিয়ে উন্নতি হলেও ফাইন্যান্সিয়াল একাউন্ট বা আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বেড়ে গেছে।
সেপ্টেম্বর শেষে এ হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৯২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের মাস শেষে যা ছিল ৩২৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এ হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল ৮৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
এ হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ, বৈদেশিক ঋণ ও দায় পরিশোধ, বন্ডে বিনিয়োগ ইত্যাদি বিষয় থাকে।