চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, কাঁচামরিচ, মুরগি, ডিম ইত্যাদির সঙ্গে এবার যুক্ত আলু যা সচরাচর সস্তা সবজি হিসেবে এতদিন পরিচিত ছিল। বাজারে একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়ানো হয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এবার তারা আলুর দাম বাড়িয়েছে। হঠাৎ কেন দাম বাড়বে, কারা বাড়াবে, কতটুকু বাড়াবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। হঠাৎই দেখা যায় দাম বেড়ে গেল। তারপর থেকে শুধু বাড়তেই থাকবে।
প্রতিবার যা হয় এবারও তা হয়েছে। বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে। মূল্য তালিকা ও ক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ না করায় নগরীর পাহাড়তলী বাজারের আলু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ৩ আড়তদারকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গত বুধবার এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তবে আলুর বাজারে কেন এ অস্থিরতা তার কোন সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এমনকি অভিযানের সময়েও তাদের কাছে মিলছে না ক্রয় রশিদ ও বিল ভাউচার। ব্যবসায়ীরা নানা ইস্যু সৃষ্টি করে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মন্তব্য করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ পরিচালক বলেন, ‘পাহাড়তলী বাজারে অভিযানে ব্যবসায়ীরা দামবৃদ্ধির কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। তারা আমাদের বলেছেন, জয়পুরহাট, মুন্সিগঞ্জের আলু ব্যবসায়ীরা আলুর দাম নির্ধারণ করে দেন যা তারা কমিশনে বিক্রি করছে। আর তাই আলুর দাম বেড়েছে।’
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ব্যবসা করতে হলে ব্যবসায়ীদের আইনি তথ্যগুলো ঠিক থাকতে হবে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ারও একটি কারণ থাকতে পারে। কারণগুলোও ব্যবসায়ীদের দেখাতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা না দেখিয়ে কেউ একজন দূর থেকে দর নির্ধারণ করে দিল, ওই দামে সবাই বিক্রি করবে, তা হতে পারে না।’
এদিকে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাবি করেছেন বর্তমানে দেশে আলুর কোনো সঙ্কট নেই। সমিতির নেতারা বলেছেন, বর্তমানে দেশের হিমাগারগুলোতে যে পরিমাণ আলু সংরক্ষিত রয়েছে, তা দিয়ে আগামী ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে আলু সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন আলু বাজারে আসবে। ফলে বাজারে আলু সরবরাহের কোনো ঘাটতি হবে না। হিমাগারের মালিকদের এই সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজি করে আলুর দাম বাড়াচ্ছেন।
এখন প্রশ্ন হলো দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার কি সবসময় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণ করবে? আর কত বছর জনগণকে শোষণ করার পর এই অসাধুরা সাধু হবে?
এ মুহূর্তের সংবাদ