ডলার-সংকট, ডলারের ওপর চাপ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি এবং বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অনিশ্চয়তার কারণে শিল্পের প্রধান উপাদান কাঁচামাল আমদানি কমে গেছে। একই কারণে শিল্প স্থাপনে নতুন প্রকল্প, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও সংস্কারের উদ্যোগও কমে গেছে।
শিল্পের প্রধান উপাদান কাঁচামাল আমদানি কমেছে ৩০ শতাংশ। ফলে শিল্প স্থাপনে নতুন প্রকল্প, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও সংস্কারের উদ্যোগও কমে গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ডলার পেতে যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনই অনেক ক্ষেত্রে ঘোষিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যেও ডলার কিনতে হচ্ছে। ডলারের দাম আনুষ্ঠানিকভাবে এক রকম ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে ডলারের দাম ভিন্ন ধরা হচ্ছে। চাহিদামতো ঋণপত্রও খোলা যাচ্ছে না।
সবচেয়ে বেশি কমেছে মূলধনি যন্ত্রে ঋণপত্র খোলা, প্রায় ৫৬ শতাংশ। একই সাথে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে ৩০ শতাংশ।
উদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমান অস্থির সময়ে কেউ নতুন করে বিনিয়োগ করার সাহস দেখাচ্ছে না। তাঁদের কথায়, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে বর্তমানে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার ক্রয়াদেশও ভালো নেই।
মূলধনি যন্ত্রের পাশাপাশি শিল্পের প্রধান উপাদান কাঁচামাল আমদানিও কমে গেছে এই সময়ে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা সম্প্রসারণ নেই বললেই চলে। কারণ, গ্যাস-সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্রয়াদেশ কমে গেছে। উৎপাদনের যে সক্ষমতা আছে, তা-ও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এর ফলে মূলধনি যন্ত্র ও কাঁচামাল দুটোরই আমদানি কমে গেছে।
ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের এই ব্যবধানের কারণে প্রবাসী আয় কমছে, ফলে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। সে জন্য ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দরের ব্যবধান না কমলে প্রবাসী আয় বাড়বে না। এতে ডলার-সংকটও কাটবে না বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত মেনে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের এক দাম নির্ধারণ করতে যাচ্ছে, যা আগামী জুন বা জুলাই থেকে কার্যকর হবে। এর ফলে ডলারের একাধিক দাম থাকবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও বাজারের দামে ডলার বেচাকেনা করবে।
ডলারের দর বাজারভিত্তিক করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন এটা করলে একটা সমাধান হতে পারে। খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের ডলারের দামের পার্থক্য সর্বোচ্চ ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এ জন্য বৈধ পথে আয় বাড়াতে হবে। তাহলে সংকটও কমবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ