মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহের ৩দিনব্যাপী বাংলাদেশ সফরকালে দু দেশের মধ্যে ব্যবসাÑবাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কানেকটিভিটি বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট যোগ দেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম মোহাম্মদ সলিহ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের পর দু দেশের মধ্যে ৪টি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে যৌথ কমিশন গঠন (জেসিসি), পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে সহায়তা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়। দুই নেতার বৈঠকে আকাশ ও নৌপথে সংযুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়, ঢাকাÑমালে বিমান চলাচল ও চট্টগ্রামÑমালে শিপিং লাইন শীগগির চালু হবে মর্মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান। দু নেতার বৈঠকে বাণিজ্য বাড়াতে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে দেখা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে জাতিসংঘ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন দু নেতা।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বৈধ করতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে মালদ্বীপ। দু দেশের মধ্যে ডাবল ট্যাক্স পরিহারে কাস্টমস সহযোগিতা চুক্তি করতে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। ব্যবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যুব উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, ওষুধসহ বিভিন্ন সেক্টরে সহযোগিতা সম্প্রসারণে দু নেতা একমত হয়েছেন বলে জানান প্রেস সচিব।
দু দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সংযুক্তির বিষয় ছাড়াও পর্যটন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা, গভীর সমুদ্র থেকে মৎস্য আহরণ ও মালদ্বীপের মানব সম্পদ উন্নয়নে দু দেশ পরস্পরকে সহায়তা করবে বলে দু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সফরে ফলপ্রসূ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলা যায়, দু দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে। মালদ্বীপে অনেক বাংলাদেশি সে দেশের অর্থনীতিতে প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন বলে প্রেসিডেন্ট সলিহ বৈঠকে উল্লেখ করেন। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান। এ জন্য ৮০ কর্মীর একটি প্রতিনিধিদল দেশটিতে পাঠানো হবে। মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহীদ ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন।
সমঝোতা স্মারক সই ও কানেকটিভিটি নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি দু দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য, অর্থনীতি, যোগাযোগ, পর্যটন প্রভৃতি ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনবে। এই সফরের ফলে ভ্রাতৃপ্রতিম দুটি দেশের সম্পর্ক আরো গভীর হবে বলে পর্যবেক্ষক মহল আশা প্রকাশ করেন।
মতামত সম্পাদকীয়