সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট পরিসরে বাংলাদেশের ভাল খেলার রেকর্ড খুব কম। খারাপ খেলে হারের রেকর্ডই বেশি। একটি ছোট্ট পরিসংখ্যানেই মিলবে তার প্রমাণ। সেই ২০২১ সালের অক্টোবরে আরব আমিরাতে হওয়া বিশ্বকাপ থেকে এই ক’দিন আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শেষ হওয়া তিনজাতি আসর পর্যন্ত ২৭ ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ২০ টিতে। খবর জাগোনিউজের
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমান আর পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে দুটি মাত্র ম্যাচ জেতা ছাড়া সব খেলায় হেরেছিল বাংলাদেশ। আর এ বছর ১৮ খেলায় অংশ নিয়ে জিতেছে মোটে ৬টিতে। তার একটি করে দুই জয় আফগানিস্তান আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আর দুটি জয় আছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। শেষ দুটি ম্যাচ জিতেছে আরব আমিরাতের বিপক্ষে। একটি ম্যাচে কোন ফল নিষ্পত্তি হয়নি। বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে গেছে। কেন টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আর ফল এত খারাপ? কী কারণে পারে না টিম বাংলাদেশ? বোদ্ধা, বিশ্লেষক, ক্রিকেট পন্ডিতদের সবাই কম বেশি একমত হয়েছেন যে, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ভাল না খেলার পেছনে প্রধান কারণ দুটি। এক ব্যাটিংয়ে শুরু ভাল না হওয়া। দুই ডেথ ওভারে বোলিংটা ঠিক মত না হওয়া। বেশির ভাগ দল ৬ ওভারের পাওয়ার প্লে-’র ফিল্ডিং বিধিবদ্ধতা কাজে লাগিয়ে ৫০-৬০ রান তুলে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে যায়। বাংলাদেশ তা পারে না। পাওয়ার প্লেতে ৫০ থেকে ৬০ রান তোলা বহুদুরে, ওই পাওয়ার প্লে’তে উল্টো ব্যাটিং মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায় বাংলাদেশের। ওই সময়েই বাংলাদেশ ২ থেকে ৩ উইকেট হারিয়ে চলে যায় ব্যাক ফুটে। যেখান থেকে আর সামনে আসা সম্ভব হয় না। আর সবচেয়ে দুর্বল ও কমজোরি জায়গা হলো ওপেনিং জুটি। মাত্র ১২০ বলের খেলা। যেখানে বেশির ভাগ দলের ওপেনাররাই বড় সময় উইকেটে কাটিয়ে স্কোর বোর্ডকে মোটা তাজ করে দেন। সেখানে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি শুরু হতেই ভেঙ্গে যায়। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ওপেনিং সংকট। এখন পর্যন্ত এমন একটা ম্যাচও নেই যাতে বাংলাদেশের ওপেনাররা পাওয়ার প্লে’র পুরো ৬ ওভার খেলে ৫৫-৬০ রান তুলে দিয়েছেন। গত বছর অক্টোবরে ওমানের মাটিতে স্কটল্যান্ডের কাছে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকে শুরু। এই সেদিন ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত প্রায় প্রতি খেলায় বাংলাদেশের ওপেনাররা ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন।
গত বিশ্বকাপে একমাত্র শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মূল পর্বের ম্যাচে নাইম শেখ আর লিটন দাসের উদ্বোধনী জুটিতে উঠেছিল ৪০ রান। এছাড়া প্রাথমিক পর্বের বাকি খেলাগুলোয় ২৫ রানের ওপেনিং জুটিও তৈরি হয়নি। বাকি উদ্বোধনী জুটিগুলো ছিল এমন- ০, ৮, ১১, ১৪, ২১, ২২, ২১, ২২ ও ১। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে ওপেনিং সংকট কাটাতে বার বার ওপেনার পরিবর্তন করা হয়। উদ্বোধনী জুটির ক্ষত সারাতে চলে মেরামতের কাজ। একে একে নাইম শেখ, লিটন দাস, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয় ও পারভেজন হোসেন ইমনকে দিয়ে ট্রাই করানো হয়, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।
এরপর প্রথাগত চিন্তা বাদ দিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট হঠাৎ ‘মেকশিফট ওপেনিং’ জুটি গড়ার কথা ভাবে। গত সেপ্টেম্বরে আরব আমিরাতের মাটিতে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে শেষ ম্যাচে সাব্বির রহমান রুম্মন ও মেহেদি হাসান মিরাজকে দিয়ে ‘মেকশিফট’ ওপেনিং জুটি সাজানো হয়।
সেই জুটি এশিয়া কাপে একটি, আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুবাইতে দুটি আর আর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় আসরেও এক ম্যাচে ইনিংসের গোড়াপত্তন করে, কিন্তু এক ম্যাচেও সাফল্য আসেনি।