নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সেবাকে অত্যাবশ্যকীয় ও জরুরিসেবা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ। একইসাথে বন্দর কাস্টমস পরিবহন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের ধর্মঘটের মাধ্যমে আমদানি রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত করার অপচেষ্টা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর খুলশী এলাকার বিজিএমইএ ভবনের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিজিএমইএ নেতারা এ আহ্বান জানান।
বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ৮০’ এর দশকে চট্টগ্রাম থেকে পোশাক শিল্পের যাত্রা শুরু হয়ে গত এক দশক পূর্বেও জাতীয় রপ্তানি ও প্রবৃদ্ধিতে চট্টগ্রামের পোশাক শিল্পের যে অবদান ছিল তা আজ ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী। চট্টগ্রামে বন্দর ও কাস্টমস্্ এর বিশেষ সুবিধা থাকার পরেও পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে কেন বিনিয়োগ বাড়ছে না তা গভীরভাবে পর্যালোচনার দাবি রাখে।’
চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে বাংলাদেশেরই উন্নয়ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যবসা বাণিজ্যে বিরাজমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সর্বক্ষেত্রে অটোমেশন চালু করে সকল কার্যক্রম সহজীকরণ করতে হবে।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর ও আনোয়ারা ইকোনমিক জোনে পোশাক শিল্পের কারখানা স্থাপনে স্বল্পমূল্যে ভূমি বরাদ্দ, সহজ ও স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ দেওয়া, চট্টগ্রামে কিছু ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় স্থাপন, চট্টগ্রামস্থ আমদানি রফতানি নিয়ন্ত্রকের দফতর, বস্ত্র অধিদফতর, ইপিবি, বিনিয়োগ বোর্ড, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিকে সমস্যা সমাধানে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতায়ন, শাহ আমানত বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক কানেকটিভিটি বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি।
বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম আরো বলেন, চট্টগ্রামকে প্রকৃত অর্থে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে- কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ, বিমান বন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বে-টার্মিনাল নির্মাণ, কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ, সমুদ্র পাড় ঘেষে আউটার রিং রোড নির্মাণ, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন, মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প অঞ্চল ও আনোয়ারায় অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। তা যথাসময়ে বাস্তবায়ন হলে এবং একইসাথে বিনিয়োগ আকর্ষণে ইজি অব ডুয়িং বিজনেস ফ্যাক্টরসমূহ সহজীকরণ করা হলে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে প্রকৃত ও কার্যকর রূপ লাভ করবে এবং এ অঞ্চল দেশের অর্থনৈতিক হাব হিসেবে পুনরায় অবদান রাখতে সক্ষম হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ৪ হাজার ৭০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২ হাজার ৭৩৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি ১ হাজার ৯৬৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১ হাজার ৬০০টি আমদানি-রফতানি কাজে নিয়োজিত আছে। চট্টগ্রামে ৬৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বন্ধ ৩৯৮টি, আমদানি রফতানি কাজে নিয়োজিত আছে ১৯০টি। করোনা পরিস্থিতিতে গত মার্চ থেকে আগস্টের মধ্যে ঢাকায় ২৮১টি ও চট্টগ্রামে ৩০টি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
সভায় বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, বিজিএমইএ’র পরিচালক ও বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম, পরিচালক এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, এসএম আবু তৈয়ব, নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, মঈনউদ্দিন আহমেদ (মিন্টু) বক্তব্য রাখেন।
বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমকে জরুরিসেবা হিসেবে অন্তর্ভুক্তের দাবি
বিজিএমইএ’র মতবিনিময় সভা