সুপ্রভাত ডেস্ক »
বছরের শুরুতেই প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ক্ষতির ধাক্কা নিতে হলো বলিউডকে। আগে প্রতি বছর চার হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা হতো বক্স অফিসে। সেই সোনালি দিন ফিরে আসবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। একের পর এক করোনার ছোবল নষ্ট করে দিচ্ছে ব্যবসার স্থিরতা।
গত বছর দীপাবলি থেকে পরপর ছবি রিলিজের পরিকল্পনা করেছিলেন নির্মাতারা। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই সেই পরিকল্পনা ধাক্কা খেল। গত নভেম্বরে ‘সূর্যবংশী’, ডিসেম্বরে দক্ষিণী ছবি ‘পুষ্পা’ যেটুকু হাসি ফুটিয়েছিল ফিল্ম ব্যবসায়ীদের মুখে, তৃতীয় ঢেউ তা মিলিয়ে দিল। আবার বাতিল হয়েছে বড় বড় রিলিজ, পিছিয়ে গেছে একাধিক ছবির শুটিংও।
৩১ ডিসেম্বর ‘জার্সি’ এবং জানুয়ারির শুরুতে ‘ট্রিপল আর’-এর মুক্তি বাতিল হওয়া দিয়ে ২০২২ সালের ক্ষতির খতিয়ান শুরু হয়েছে। দুটি ছবির প্রচারে বড় অংকের টাকা ইতোমধ্যেই খরচ হয়ে হয়েছিল। নতুন করে রিলিজের পরিকল্পনার সময়ে আবার খরচের বোঝা টানতে হবে নির্মাতাদের। পরিচালক আনিস বাজমির মতে, এই দুই ছবির প্রচারে হওয়া ক্ষতির অংক দেখে এখন কোনো নির্মাতাই আগামী ছবির প্রচারে লগ্নি করতে চাইছেন না। ছবি আদৌ মুক্তি পাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন সবাই।
এসএস রাজামৌলীর মাল্টিস্টারার ছবি ‘ট্রিপল আর’-এর ব্যবসার ওপর বড় ভরসা ছিল ইন্ডাস্ট্রির। যেমন ভরসা ছিল প্রভাসের ‘রাধে শ্যাম’ এবং অক্ষয় কুমারের ‘পৃথ্বীরাজ’-এর ওপর। এ দুটি বড় ছবি জানুয়ারিতে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, যা বাতিল হয়েছে।
পিছিয়ে গেছে সালমান খান-ক্যাটরিনা কাইফের ‘টাইগার থ্রি’, শাহরুখ খানের ‘পাঠান’, রণবীর সিংহ-আলিয়া ভট্টর ‘রকি অওর রানি কী প্রেম কাহানি’র শুটিং। ছবির শুটিং বাতিল হলেও ক্ষতির ভার বইতে হয় নির্মাতাদের। ট্রেড অ্যানালিস্টদের মতে, ছবির রিলিজ এবং শুটিং পিছিয়ে যাওয়ায় জানুয়ারিতেই ১৫০০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে ইন্ডাস্ট্রি। রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্টের সিইও শিবাশিস সরকার বলছেন, বছরের শুরুতেই বড় ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। আশা করছি, এপ্রিল থেকে পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হবে। রিলায়্যান্সের প্রযোজনায় ‘এইটিথ্রি’ ডিসেম্বরে মুক্তি পেলেও, সে ছবির ব্যবসা ইন্ডাস্ট্রির হাল ফেরাতে ব্যর্থ।
ফেব্রুয়ারি মাসে সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানেও প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে রয়েছে। যদিও মঙ্গলবার অক্ষয় কুমার ঘোষণা করেন, মার্চ মাসে তার ‘বচ্চন পা-ে’ সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। করোনার জের যেমন কাটছে না, তেমনই ওটিটিতে সিনেমা রিলিজ করে দেওয়ার প্রবণতাও জারি রয়েছে। তবে ‘সূর্যবংশী’ এবং ‘পুষ্পা’ প্রমাণ করে দিয়েছে দর্শক সিনেমা হলের বিনোদনে আস্থা রাখছেন এখনও। সেটুকুই আশার কথা।