চবি প্রতিনিধি »
শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বে এখন ভয়ের নাম প্লাস্টিক। কিছুদিন আগে পরিবেশ দিবসে এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় প্রতিদিন প্রায় ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে। অপচনশীল হওয়ায় প্লাস্টিক কমাচ্ছে মাটির উর্বরতা। তাই প্লাস্টিকের ব্যাবহার কমিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ‘প্লাস্টিকের বিনিময়ে বই বিতরণ’ নামক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই শিক্ষার্থী।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্লাস্টিকের বিনিময়ে বই বিতরণের এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। ‘পাশে আছি ইনিশিয়েটিভ’ এর সহযোগিতায় এ সময় তারা প্রায় একশো বই বিতরণ করেন। বিনিময়ে সংগ্রহ করেন এক হাজারেরও বেশি প্লাস্টিক। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা যাতে প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করে এবং পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করে সে বিষয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পিং পরিচালনা করা হয়। ‘প্লাস্টিকের বিনিময়ে বই বিতরণ’ কর্মসূচির উদ্যোক্তারা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বুলবুল ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা।
প্লাস্টিকের বিনিময়ে বই উপহার পাওয়া দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মনোরঞ্জন রায় বলেন, এরকম উদ্যোগ নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবি রাখে। একই সাথে পরিবেশ দূষণের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে, এবং বই পড়ায় উৎসাহিত করছে। আমিও প্রায় বিশটা প্লাস্টিক দিয়ে দুইটা বই উপহার পেয়েছি।
শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান বলেন, প্লাস্টিকের সচেতনতা শুরু হোক আমাদের থেকেই। আমরা শিক্ষার্থীরা প্লাস্টিকের ভয়াবহতা জানি, কিন্তু ব্যাবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হচ্ছি না।
এই আয়োজন সম্পর্কে আসাদুজ্জামান বুলবুল বলেন, প্লাস্টিক পঁচে না। হাজার বছর পরেও প্ল্যাস্টিক থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। যা মানুষ ও অন্যান্য জীবের হরমোনাল সিস্টেম নষ্ট করে এবং ক্যান্সারের কারণ হয়। প্লাস্টিক জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এসব ক্ষতিকর বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্লাস্টিকের বিনিময়ে বই বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করি।
আরেকজন আয়োজক মো. মাসুদ রানা বলেন, আমাদের ব্যবহার্য যে দ্রব্যটি পরিবেশ দূষণের পেছনে অন্যতম বড় অবদান রাখছে তা হলো প্লাস্টিক। আমরা প্রতিনিয়ত প্লাস্টিক ব্যবহার করছি এবং পরিবেশ দূষিত করছি। পরিবেশ দূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতন বৃদ্ধি এবং ব্যবহৃত প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করাই ছিল আমাদের এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।