প্রাণিসম্পদ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে সিভাসু

দেশে প্রথমবারের মতো কুকুরের ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে দেশের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। ২৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর ভেটেরিনারি ক্লিনিক্সের আওতাধীন এস এ কাদেরী টিচিং ভেটেরিনারি হাসপাতালে এই অপারেশন সম্পন্ন করেন। এই ধরনের সার্জারি বাংলাদেশে এটিই প্রথম।
সুপ্রভাত প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে প্রফেসর ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘এর আগে প্রায় সাত-আটটি ট্রায়াল অপারেশন করতে হয়েছে। এরপরই আমরা সফলতার মুখ দেখেছি। সারাদেশের মধ্যে পোষা প্রাণির সফল ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির ঘটনা এটিই প্রথম। সিভাসুর বাইরে এ ধরনের ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি মেশিন কোথাও নেই।’
এ ধরনের অপারেশনে পিত্তথলির পাথরসহ পেটের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই নাভিতে ছিদ্র করে ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরে দেখে অস্ত্রোপচার করা যায়। এর ফলে সাতদিনে এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাণি তাৎক্ষণিকভাবেই সুস্থ হয়ে যায়। এ ধরনের সাফল্যের ফলে এখন থেকে কুকুর, বিড়াল, বানরের মতো পোষা প্রাণির পাকস্থলির জটিল সমস্যার চিকিৎসা সহজ হয়েছে বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।
গত দুই দশকের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। ধান, মাছ, ফল, সবজি ইত্যাদি উৎপাদনে বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক স্থানে পৌঁছেছে। এর পাশাপাশি মুরগি, ছাগল, গরু উৎপাদনেও বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে। এর সঙ্গে বাড়িতে পশু পালনে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
একসময় মানুষই যেখানে ভালোমতো চিকিৎসা পেতো না সেখানে পোষা প্রাণির চিকিৎসার তো প্রশ্নই আসতো না। কারণ পশু চিকিৎসাসুবিধাও ছিল সীমিত। এখন এ বিষয়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, হাসপাতাল হয়েছে। চিকিৎসাসুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত এই সেবা বিস্তৃত হয়েছে। একসময় খুড়ারোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মারা যেত। এভাবে কত শত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে। এখন শুধু পশু নয় পাখির চিকিৎসাও প্রদান করছে দেশের ভেটেরিনারি হাসপাতালগুলো।
কাজেই নতুন এই চিকিৎসাপদ্ধতি সফল হওয়ায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠানকে সাধুবাদ জানাই। আশা করি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তাঁরাও বিশেষ অবদান রাখবেন।