নিজস্ব প্রতিনিধি, ফটিকছড়ি »
কর্ণফুলী চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার বিকেলে ফটিকছড়ি উপজেলার কর্ণফুলী চা বাগানের মেডিক্যাল মাঠে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চা বাগানের শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথমে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন কর্ণফুলী চা বাগানের চা শ্রমিক লক্ষ্মী নারায়ণ। এসময় তিনি চা শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের মায়ের মতো। আপনি আছেন বলে আমরা এখনও আছি। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ১২০ বেতনে চাকরি করি। এতে আমাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যায়। আপনি ১৪৫ টাকা করে বেতন বাড়িয়েছেন বলে শুনে আমরা কাজে যোগ দিয়েছিলাম পরে আপনি আমাদের কথা চিন্তা করে ১৭০ টাকা বেতন নির্ধারণ করে দিলেন। এতে অনেক খুশি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
এ মহিলা চা শ্রমিক বিভিন্ন দাবির বিষয় তুলে ধরে আরও বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চা বাগানের স্কুলে পড়তে পারে কিন্তু আরও পড়াশোনা করতে হলে ছেলেমেয়েদের অনেক দূরে পড়তে যেতে হয়। আপনি যদি কষ্ট করে একটি হাই স্কুল করে দিলে আমরা আপনার প্রতি অনেক খুশি হবো।’
এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন চা কন্যা মুনমুন ঘোষ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার বাবা ও মা এ চা বাগানের (কর্ণফুলী চাবাগান) এর চা শ্রমিক। একজন চা শ্রমিক হয়েও ডিগ্রি ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছি। চা বাগানে নির্মিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ চা কন্যা আরো বলেন, আপনি ইতিমধ্যে চা শ্রমিকদের বেতন ১২০ থেকে ১৭০ টাকায় উন্নীত করেছেন। তাদের জীবনযাত্রার মান করেছেন উন্নত, এ জন্য সকল চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি জানাই কৃতজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রী আজ আমার মতো অনেক চা শ্রমিকের ছেলেমেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে। তা শুধুমাত্র আপনার শিক্ষা ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার কারণে। আমাদের প্রত্যাশা আপনি আমাদের পাশে ছিলেন, আমাদের পাশে থাকবেন।’ এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীকে কর্ণফুলী চা বাগানে আমন্ত্রণ জানান এবং চায়ের দাওয়াত দেন এ চা কন্যা।
উপজেলার কর্ণফুলী চা বাগানে আয়োজিত এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভা-ারী, মহিলা সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাব্বির রহমান সানি, উপজেলা চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, ফটিকছড়ি মেয়র মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আফতাব উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।