নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘নদীতে লাগিল দোলা, বাঁধনে পড়িল টান-একা বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান। সেই গান শুনি, কুসুমিত তরুতলে তরুণ-তরুণী, তুলিল অশোক-মোর হাতে দিয়ে তারা কহিল, এ আমাদেরই লোক”- রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরের ‘পরিচয়’ কবিতা আবৃত্তি করছিলেন প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সদস্য এটিএম সাইফুর। কখনও উচ্চারিত হতে শোনা যাচ্ছিলো কবি নজরুলের অমর কবিতা ‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’। এভাবে আবৃত্তির মাধ্যমে মানবিক সমাজ গড়ার কথা বলছিলেন প্রমা’র আবৃত্তিশিল্পীরা।
২৯ নভেম্বর বিকেল ৫ টায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের ৩৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কথামালা, গান, নাচ, আবৃত্তির মাধ্যমে সদস্যরা উৎসবমুখর পরিবেশে এই দিবসটি পালন করেন। ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে, এ জীবন ধন্য করো পুণ্য করো দহন দানে’-গানের মাঝে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পী ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।
উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংগীত শিল্পী কল্পনা লালা, কবি আশিষ সেন, কবি আকতার হোসেন, কবি ফাউজুল কবীর, আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নাট্যজন সুচরিত দাশ, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, নূরজাহান খানম, দেবাশীষ রুদ্র প্রমুখ। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রমা সবসময় সত্যের পক্ষে, সাম্যের পক্ষে, শুভশক্তির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেটি সত্য এবং ন্যায়ের পথে চলে। প্রমা এই ৩৩ বছর ধরে এমন অনেক ন্যায়নিষ্ঠ সত্যভাষী প্রজন্ম তৈরি করেছে ।
সংগঠনটির সভাপতি রাশেদ হাসান বলেন, দিবসটি আমরা প্রতি বছর উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করে থাকি। ৩৩ বছরে পৌঁছানোর পেছনে ছিলো অনেকগুলো মানুষের সময়, শক্তি ও মেধা। আমাদের সংগঠনের লক্ষ্য মানুষকে প্রমিত উচ্চারণের প্রতি আগ্রহী করে তোলা, আবৃত্তি চর্চার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা। আমরা চাই দেশের সর্বত্র আবৃত্তি চর্চা হোক। প্রমিত উচ্চারণের চর্চা হোক। মূলত আবৃত্তির চর্চা শুদ্ধতার চর্চা। এই চর্চা সবসময় অব্যাহত রাখতে আমরা নিয়মিত বিভিন্ন আয়োজন করে থাকি।এর মাধ্যমে একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা আমাদের লক্ষ্য।’ কবি ইউসুফ মাহমুদ বলেন,’ প্রমা আবৃত্তি সংগঠন হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৩৩ বছরে পৌঁছেছে। কবিরা কবিতা লেখেন, আবৃত্তি শিল্পীরা কবিতা আবৃত্তি করেন।