হুমাইরা তাজরিন »
হালদার প্রকাশনী থেকে আহমদ ছফা রচিত ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ প্রবন্ধ গ্রন্থটি দেখছিলেন মুনতাসির মাহমুদ। সুপ্রভাতকে তিনি বলেন, ‘আগের লেখকেরা যে মানের লেখা লিখে গেছেন, এখন কি আসলে সেরকম লেখা আমরা পাচ্ছি? কিছু কিছু লেখা পড়ে হতাশ হতে হয়। তবুও খুঁজছি, ভালো লেখা পাওয়া যায় কিনা। আমার আহমদ ছফা, হুমায়ুন আজাদ স্যারের লেখা ভালো লাগে। তবে চেষ্টা করি নতুন লেখাগুলোও পড়তে। আশা করি বইমেলার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে, প্রকাশকদের পৃষ্ঠপোষকতা করলে লেখার চর্চাটা বাড়বে। আমরা নতুনদের থেকে ভালো লেখা পাবো।
মেলায় উপস্থিত ছিলেন ‘আড়াইপাতা’ উপন্যাসের লেখক মহি মুহাম্মদ, সুপ্রভাতকে তিনি ‘আড়াইপাতা’ সম্পর্কে বলেন, ‘এটি চা শ্রমিকদের জীবনের গল্প। এখানে তাদের জীবনঘনিষ্ট ঘটনাবলী উঠে এসেছে। এই উপন্যাসটি প্রথম যখন প্রকাশ করি ২০১২ সালে তখন এর শব্দ সংখ্যা ছিলো ত্রিশ হাজার। এবার বইটির যুগপূর্তির সংখ্যা বেরিয়েছে পঞ্চান্ন হাজার শব্দে। তাই গল্পে পরিবর্তন এসেছে। এখানে তাদের অধিকার আন্দোলন, পাওয়া না পাওয়া, সুখ- দুঃখ, বঞ্চনা প্রায় সবই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যেহেতু আমার জন্ম বেড়ে উঠা চা বাগানে, তাদেরকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। উপন্যাসটির চরিত্রগুলো, গল্প একেবারে বাস্তব ঘনিষ্ট।’
গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি ছিলো বইমেলার চৌদ্দতম দিন। শিরীষতলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর বর্ণিল আয়োজনে সেজেছে মেলাপ্রাঙ্গণ। ভিন্ন ভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সেজে এসেছেন মেলায়। স্ব-স্ব ভাষা ও সংস্কৃতির উপস্থাপনে এদিনে ছিলো সমৃদ্ধ আয়োজন। সাংস্কৃতিক আয়োজন শুরু হওয়ার সাথে সাথে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। কখনও অহমীয়া গান ‘রঙিলা মনের’ সুরে ছন্দময় নাচ, কখনও ত্রিপুরা সংস্কৃতির পানি তোলার নাচ, কখনও মারমা গানের তাল। নগরের বুকে বর্ণিল পাহাড়ের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিই যেন একে একে পরিবেশিত হচ্ছিলো।
প্রথমেই ছিল আলোচনা সভা। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি ও নাট্যজন শিশির দত্ত, নাট্যজন মৃত্তিকা চাকমা, শিক্ষাবিদ প্রশান্ত ত্রিপুরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৃগোষ্ঠীর গবেষক ও কথাসাহিত্যিক ড. আজাদ বুলবুল।
ধারাবাহিক আয়োজনে আগামী দিন (আজ) থাকবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একুশে সম্মাননা স্মারক ও সাহিত্য পুরস্কার বিতরণ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এদিন এসেছে কয়েকটি বই। শৈলী প্রকাশনী হতে রাশেদ রউফের ‘শ্রেষ্ঠ কিশোরগল্প’, বনশ্রী বড়ুয়ার ‘হে দুঃখের অতিথি’, জসীম চৌধুরী সবুজের ‘মূল্যবোধের সংকট ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন’, ড. মো. আবুল কাসেম ‘ভাষা বিষয়ক বিবিধ বিবেচনা’।