নিজস্ব প্রতিবেদক »
ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা শোনার পর খাতুনগঞ্জের আড়তে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তিনদিনের ব্যবধানে আবারও চড়া পেঁয়াজের বাজার। আড়ত পর্যায়ে সকল ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা।
শনিবার দুপুরে খাতুনগঞ্জ ও চাকতাই ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০৮ টাকা। যা গত বুধবার বিক্রি হয়েছিল ৯৫ টাকা। আর দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০২ থেকে ১০৫ টাকা যা এতদিন বিক্রি হয়েছিল ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা। মেহেরপুরি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, যা এতদিন বিক্রি হয়েছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।
জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির খবর শোনার পর খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারীরা মজুদকৃত পেঁয়াজ কম দরে বিক্রি করছিলেন। পরবর্তীতে আমদানির পেঁয়াজ আসতে সময় লাগবে শোনার পর আবারও দাম বাড়িয়েছেন তারা।
খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, খাতুনগঞ্জের আড়তে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ভারতীয় পেঁয়াজ আসা বন্ধ হওয়ার অজুহাতকে কাজে লাগিয়ে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ হাতিয়ে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহের সোমবার ও মঙ্গলবারে আড়তে পর্যাপ্ত মেহেরপুরের পেঁয়াজের ট্রাক এসেছে। তখন এ আড়তে পেঁয়াজের বাজার দর ছিল ৬৫ টাকা কেজি। যা এখন আড়তদারেরা ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা। আড়তদাররা আমাদের বলেন, গত কয়েক দিন খাতুনগঞ্জে কোনো পেঁয়াজ ঢোকেনি। তাই দাম বেড়েছে। সরবরাহ সংকটকে কাজে লাগিয়ে খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের আড়তদাররা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের।
এদিকে সরকারের বাজার তদারকির রেকর্ডেও উঠে আসে পেঁয়াজের বাজার চড়া হওয়ার চিত্র। তথ্যমতে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে যে মানের দেশি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৭০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল, একই মানের পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি করছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। গত এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আর সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
দাম চড়া হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চাক্তাই পেঁয়াজ আড়তদার মো. ফোরকান বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকাতেই দেশীয় পেঁয়াজে বাজার ক্রেতা চাহিদা পূরণ করতে হিমসিম খাচ্ছে। যার ফলে পেঁয়াজের বাজার দর স্থিতিতে থাকছে না। গত মঙ্গলবার ও বুধবার কিছুটা কমতির দিকে থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকে পেঁয়াজের বাজার আবারও চড়া হয়ে উঠে।’
পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে হলে ভারতের পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প নেই বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী।
চাকতাইয়ের আবুল বশর অ্যান্ড সন্সের স্বত্তাধিকারী মো. আবুল বশর সওদাগর বলেন, যতদিন ধরে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক হবে না। ততদিন এভাবে পেঁয়াজের দামে অস্তিরতা দেখা দেবে। সরকারের বিষয়টি ভাবতে হবে।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের আড়তদার মো. ইদ্রিছ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দাম আরও বাড়তি ছিল। আজ (শনিবার) দাম একটু কমেছে। দেশি মুড়িকাটা ও মেহেরপুরি পেঁয়াজে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আমদানির ব্যবস্থা করা গেলে পেঁয়াজের দর কমবে।