পর্যটকের পদচারণায় মুখর হচ্ছে সেন্টমার্টিন

জাহাজ চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »

শুরু হয়েছে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজের চলাচল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর জাহাজের চলাচল শুরু হওয়ায় পর্যটকের পদচারণায় সেন্টমার্টিন এখন সরগরম।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউ ঘাট থেকে ছেড়ে গেছে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে একটি জাহাজ। বছরের প্রথম পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে গমন করায় খুশি হয়েছেন দ্বীপের মানুষ। হোটেল-রেস্তোঁরা ব্যবসায়ীসহ যারা পর্যটন সংশ্লিষ্ট আছেন তারা পর্যটকদের স্বাগত জানাতেও প্রস্তুত রয়েছেন।

তবে দ্বীপবাসী ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল না করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।

কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের কক্সবাজারস্থ ব্যবস্থাপক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ৭৫০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন রওনা দেয়। জাহাজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দুপুর ১টার দিকে জাহাজটি সেন্টমার্টিন পৌঁছে। আর বিকাল সাড়ে ৩টায় যাত্রীদের নিয়ে জাহাজটি সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। জাহাজের যাত্রীদের জন্য ১০ ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন মূল্যের টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। সর্বনি¤œ ৩ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা পর্যন্ত টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাহাদুর বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং নাফ নদীতে ডুবোচর তথা নাব্যতা সংকটের কারণে সরকার চলতি মৌসুমে টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। তবে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে আরও কয়েকটি জাহাজ পর্যটকদের পরিবহনে যুক্ত হবে বলে জানান এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেসের এ কর্মকর্তা।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) এর সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। কিন্তু হঠাৎ করে চলতি মৌসুমে টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছিল। এখন জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা খুশী। কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণ বাধাগ্রস্ত হলে দেশের পর্যটন শিল্পের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে পর্যটকরা কক্সবাজারবিমুখ হবে।

সেন্টমার্টিন হোটেল সী প্রবালের পরিচালক আবদুল মালেক জানান, এ বছর টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল না করলে হোটেল ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। কারণ মৌসুম সামনে রেখে অনেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে হোটেল রেস্তোরাঁ করেছেন। সেখানে একটি জাহাজে ৬০০/৭০০ পর্যটক গেলে কিভাবে ব্যবসা করবেন।

দ্বীপের েেচয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনের লোকজন অপেক্ষা করে কখন পর্যটন মৌসুম শুরু হবে তখনই হাসি ফুটে মানুষের। কিন্তু এ বছর হতাশ দ্বীপবাসী। তিনি আশানূরূপ জাহাজ চলাচলে অনুমতি প্রদানের সংশ্লিষ্টদের অনুরোধের কথা জানান।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে আপাতত টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধু কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস পরীক্ষামূলক চলাচল করছে। অবস্থা বুঝে পর্যায়ক্রমে আবেদন করা জাহাজগুলোকে অনুমতি দেওয়া হবে। তবে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সরকারের দেয়া নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।