নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া
চকরিয়ায় বাবার লাশ দাফনের ৯ ঘণ্টার পর পৃথিবীতে আসলেন তার নবজাতক কন্যাশিশু। শুক্রবার বেলা এগারোটায় নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয় বাবা শাহজাহান মনিরকে। এর মাত্র ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে একইদিন রাত আনুমানিক নয়টার দিকে চকরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভূমিষ্ঠ হয় তার ফুটফুটে কন্যাসন্তান। অর্থাৎ জন্মের আগেই বাবাকে হারালো নবজাতক। দেখা হয়নি বাবা-মেয়ের!
চকরিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা শাহজাহান মনির (৪০) দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুবরণ করেন। শুক্রবার বেলা এগারোটায় তার নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আর এদিন রাত আনুমানিক নয়টার দিকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী রুশনি জান্নাত।
শাহজাহান মনিরের বড় ভাই আবু নছব বলেন, কয়েক মাস আগে শাহজাহানের লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। বাংলাদেশে কিছুদিন চিকিৎসা করার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের হায়দ্রারাবাদের এআইজি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে কেমোথেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে দেশে ফিরে চট্টগ্রামের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল আউয়ালের তত্ত্বাবধানে ছয়টি কেমোথেরাপি নেন তিনি। তবে অবস্থার অবনতি হলে শাহজাহানকে আবার হায়দ্রারাবাদে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে গত মঙ্গলবার শাহজাহান দেশে ফেরে বৃহস্পতিবার রাতেই মৃত্যুবরণ করেন।
শাহজাহান মনিরের স্ত্রী রুশনি জান্নাত বলেন, সানজিদা হক রাফা নামের তাঁদের আড়াই বছর বয়সী আরেকটি মেয়েশিশু আছে। শাহজাহানই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। এখন দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। স্বামীর চিকিৎসার পেছনেও অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি শাহজাহানের সঙ্গে রুশনির বিয়ে হয়েছিল। শাহজাহানের লাশ দাফনও করা হয় একই তারিখে অর্থ্যাৎ ২০২৩ সালের ২৭ জানুয়ারি। আবার ওই তারিখেই দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হলেন শাহজাহান মনির।