সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
সিনিয়রদের সাফ টুর্নামেন্টেই নয়, মেয়েদের বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টেও যে বাংলাদেশ রাজত্ব করছে তার প্রমাণ আবারও মিললো মাঠে। ঘরের মাঠে হওয়া প্রথম সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ। ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আবারও তারা প্রমাণ করেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মেয়েরাই সেরা। কিছুদিন আগে সিনিয়রদের আসরেও এই নেপালকে হারিয়েই বাংলাদেশ সাফের শিরোপা জিতেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেললেও গোলমুখ খুলতে পারছিল না বাংলাদেশ। বিরতির ঠিক তিন মিনিট আগে মাঠে উপস্থিত হাজারো সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটায় স্বাগতিক দল। শাহেদা আক্তার রিপার পর অধিনায়ক শামসুন্নাহার লক্ষ্যভেদ করে স্বাগতিকদের এগিয়ে নিয়েছেন। দুই গোলে লিড ধরে রেখে বিরতির পর উন্নতি খাতুন ব্যবধান বাড়ালে বিজয়ের চওড়া হাসি হেসেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্বাগতিক দল। ম্যাচঘড়ির ২ মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফাঁকায় বল পেয়েও আকলিমার শট গেছে ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
১৮ মিনিটে শাহেদা আক্তার রিপার আড়াআড়ি ক্রসে আকলিমা খাতুন শট নিলেও গোলকিপার কবিতা বিকে জায়গা থেকে ডান দিকে একটু সরে এসে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সেটি রক্ষা করেছেন।
৩২ মিনিটে বক্সের ভিতরে শামসুন্নাহারকে ফেলে দিয়েছিলেন কুমারি তামাং। কিন্তু সেটি ভুটানের রেফারির চোখ এড়িয়ে গেছে!
চার মিনিট পর নেপাল এই অর্ধে বলার মতো আক্রমণ গড়েছে। বক্সের ভেতরে পেলে আমিশা কারকির জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছায়নি।
শেষ দিকে অবশ্য আর হতাশ হতে হয়নি বাংলাদেশকে। ৪২ মিনিটে কুমারি তামাং বক্সের মধ্য থেকে ঠিকমতো বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। তার ভুল পাসে কাছে থাকা শাহেদা আক্তার রিপা বল পেয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে জাল কাঁপিয়েছেন।
যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ ব্যবধান বাড়িয়ে নেন অধিনায়ক শামসুন্নাহার। আফইদার লং বল প্রতীক্ষা চৌধুরী ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি। শামসুন্নাহার বল পেয়ে বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে নিখুঁত শটে স্কোর ২-০ করেছেন।
দুই গোলে পিছিয়ে থেকে নেপাল ড্রেসিং রুম থেকে এসে গোল শোধ দেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোল তারা পায়নি। বরং স্বাগতিকরা শেষের দিকে আরও একটি গোল দিয়ে তাদের ম্যাচ থেকেই ছিটকে দিয়েছে।
তবে বেশ কিছু সুযোগ কাজে লাগানো গেলে ফাইনাল জয়ের ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো। ম্যাচঘড়ির ৫০ মিনিটে সুঙ্কলা রায় বক্সের ভেতরে ফাঁকায় থেকেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। ৫৫ মিনিটে আফঈদার ফ্রি-কিকে শামসুন্নাহার গোলকিপারকে একা পেয়েও সেটি মিস করেছেন। ৭৮ মিনিটেও হতাশ করেছেন শামসুন্নাহার। একা বল নিয়ে বক্সে ঢুকে গোল করতে পারেননি।
৮০ মিনিটে নেপালও ভালো সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু আমিশা কারকির শট গোলকিপার রুপনা বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলকে রক্ষা করেছেন।
তবে ৮৭ মিনিটে আর কোন ভুল করেনি বাংলাদেশ। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে নেওয়া রিপার দারুণ ফ্রি-কিকে উন্নতি খাতুন গোলাইনের সামনে থেকে লক্ষ্যভেদ করে বাংলাদেশকে ৩-০ গোলের জয় এনে দিতে ভূমিকা রেখেছেন।