সুপ্রভাত ডেস্ক »
আগামী নির্বাচনকে ঘিরে দেশের ভেতর ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনও আমাদের সামনে, সেটা মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে। খবর সারাবাংলার।
গতকাল বুধবার গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র হবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও হবে। কারণ একটা দেশ এত দ্রুত এত উন্নতি করুক, অনেকে তো এটা চায় না। কাজেই তারা তাদের দিক থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করেই যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা এটা যেন অব্যাহত থাকে, সেটা মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি বা জাতীয় পার্টি এসব দলগুলো, এরা তো আর মাটি-মানুষ থেকে উঠে আসে নাই। এক মিলিটারি ডিকটেটর ক্ষমতা দখল করে, তার পকেট থেকে একটা দল বের করে দিয়েছে সেটা নিয়ে তারা চেচামেচি করে যাচ্ছে। প্রতিদিন মাইক লাগিয়ে মিথ্যা কথা বলেই যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোজা রমজানের দিন এত মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে কেন? আমি তাও বুঝতে পারছি না। একটু তো রয়ে সয়ে বলা উচিত। কোনো উন্নতিই নাকি তারা দেখে না চোখে।’
দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মানুষই আমার পরিবার। আর আমি যেটুকু করি বাংলাদেশের মানুষের জন্যই করি। আপনজন সব হারানোর পর এদেশের মানুষই কিন্তু আমাকে আশ্রয় দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই এজন্য যে, তারা পাশে ছিল বলেই দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। আপনারা আছেন বলেই কাজ করতে পারছি।’
আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে তাদের ভোটে নির্বাচিত হয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি, মানুষ আমাদের ভোট দেয়। সেটা হচ্ছে বাস্তব কথা। কাজেই এখানে আমাদের ভোট চুরি করাও লাগে না, ভোট কোন কিছু করাও লাগে না।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের সেবা করে জনগণের আস্থা অর্জন করেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ কিন্তু অন্যভাবে কখনো ক্ষমতায় আসে নাই। সব সময় ভোটের মাধ্যমে এসেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা (বিএনপি) এখন মাইক লাগিয়ে সারাদিন বসে কথা বলে সত্য মিথ্যা দিয়ে। তাদের তো ক্ষমতায় আসাই হচ্ছে বন্দুকের নলে। অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে। এজন্য জনগণ তাদের প্রত্যাখান করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচন বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৯টি সিট। সে নির্বাচন নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে নাই। তাদের অবস্থান তো সেখানেই নির্দিষ্ট। তারপরও আমরা দেশে উন্নয়নের কাজ করেই দেশকে এত উন্নতি করতে পেরেছি। আজকে আমরা এটাই শুকরিয়া আদায় করি।’
সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে দলটির সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সংগঠনটা আরও শক্তিশালী হবে, সেটা আমরা চাই। আর আগামী নির্বাচনও আমাদের সামনে, সেটা মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। কাজেই আমরা জাতির পিতার সেই আদর্শ মেনেই দেশ এবং দেশের মানুষের উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
দেশের দরিদ্র ও অতি দরিদ্র মানুষ কমেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মঙ্গলবার একনেকে আমাদের পরিকল্পনামন্ত্রী সারা বাংলাদেশে সার্ভে রিপোর্ট পেশ করলেন। সেখানে বললেন, আমাদের দারিদ্র্যসীমা ২০০৬ সালে ৪১ ভাগ ছিল, আজকে সেটা ১৮ ভাগে নেমে এসেছে। তো আমি বললাম আরও ২/৩ ভাগ যাতে তাড়াতাড়ি কমাতে পারি, সেটা আমরা চেষ্টা করবো। আর অতি দরিদ্রের হার যেটা প্রায় ২৫ ভাগ ছিল সেটা ৫ ভাগে নেমে এসেছে। এটা মাথায় রেখে আমাদের আরও সামনে কাজ করতে হবে দেশের মানুষের জন্য। যে একটা মানুষ গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না।’
ভূমিহীন মানুষকে খুঁজে পেতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকের অঞ্চলে আপনারাও খোঁজ করবেন কোন পরিবার নিঃস্ব আছে কি না, ভূমিহীন আছে কিনা। কেউ ভূমিহীন থাকবে না এই দেশে।’