সুজনের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সঠিক জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তথা সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। ভোট প্রদানে আগ্রহীরা নির্বিঘ্নে ও স্বাধীনভাবে যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনার মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকলেও অন্য স্টেকহোল্ডারদের কার্যকর ভূমিকায় অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু হয়। নিকট অতীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনসমূহে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ থেকে সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সকল দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন, চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। চট্টগ্রাম জেলা সুজন’র সভাপতি ও অর্থনীতিবিদ প্রফেসর সিকান্দর খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয় কালো টাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ গ্রহণ, নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং ফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
চসিক নির্বাচন গত ২৯ মার্চ ২০২০ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ব্যাপকতার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছিল। আমরা এখনো করোনার প্রাদুর্ভাবমুক্ত হয়নি। পাশাপাশি বিভিন্ন অনিয়মের কারণে নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থাও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই কোনো কোনো প্রার্থী বাধাদানের অভিযোগ করে আসছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনের মাঠ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হামলা-মামলার ঘটনা এই উত্তাপকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। গত কয়েকদিনে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে বিএনপি’র শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়েছে। ১৪ জন গ্রেফতারও হয়েছে ইতোমধ্যেই। এসব ঘটনায় বিএনপির কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যেও সহিংসতা ঘটছে। ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। এমতাবস্থায় নির্বাচনের দিন পর্যন্ত সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মাঠে থাকতে পারবে কিনা, ভোটাররা কেন্দ্রমুখী হবে কি না, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় বাড়ছে। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যয় নিয়ে নির্বাচন কমিশন যদি এখনই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যদি আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে, নৈতিকতা ও সাহসিকতার সাথে তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, তাহলে অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা চাই না ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নেতিবাচক অনুষঙ্গগুলো বা অভিযোগগুলোর পুনরাবৃত্তি এই নির্বাচনে ঘটুক। চসিক নির্বাচনও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে হচ্ছে। বুথ দখল করে একজনের ভোটের বাটন অন্য আর একজন টিপে দেওয়ার ঘটনা অন্তত এই নির্বাচনে না ঘটুক।