নিজস্ব প্রতিবেদক »
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে পালিয়ে না যাবার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, দয়া করে নির্বাচনের খেলা থেকে পালিয়ে যাবেন না। নির্বাচনে আসুন, অংশগ্রহণ করে আপনাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। আপনারা দশ শতাংশ ভোট পান কিনা সেটি পরখ করে দেখুন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও বোয়ালখালী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলমের শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে এই শোক সভার আয়োজন করে।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এমপি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এস এম আবুল কালাম।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির এখন দুই ভীতি, একটা হচ্ছে নির্বাচন ভীতি, আরেকটা হচ্ছে মানুষ। সেজন্য বিএনপি মহাসচিবসহ তাদের নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিশেষ করে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর বিএনপির মাথা আরো বেশি খারাপ হয়েছে। কারণ এখন বিএনপি আর নির্বাচন প্রতিহত এবং বর্জন করার কথা বলতে পারবে না, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না। ১৯৭৯ সালের নির্বাচন সময়ে জিয়াউর রহমান আমাদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম শহরে বিএনপি’র ক্যাডারদের দা কিরিচ আর লোহার রডসহ নামিয়ে দিয়ে মহড়া দেয়া হয়েছিল। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ঠিকমতো ভোট দিতে দেয়া হয়নি। সেই নির্বাচনেও আমরা ৩৩/৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি। আসলে আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করেন তাহলে তারাই ১০ শতাংশের বেশি ভোট পাবে না।
বিএনপিকে কেন মানুষ ভোট দেবে প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সাড়ে তিন হাজার মানুষ পুড়িয়েছে। তৎমধ্যে পাঁচ’শ জন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে। চার হাজারের মত গাড়ি পুড়িয়েছে এবং মানুষের সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুলিশের উপর হামলা পরিচালনা করেছে। বিএনপির এজন্য মানুষের কাছে যেতে ভয়।
বিএনপি এখন ঘাপটি মেরে বসে আছে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা আবার বের হয়ে জনগণের ওপর হামলা পরিচালনা করবে। তারা জানে নির্বাচনে জিতবে না, এখন চেষ্টা করবে দেশে গ-গোল লাগানোর। গ-গোল লাগিয়ে দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু জনগণ তাদেরকে সেই সুযোগ আর দেবে না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য আছে। সেই পার্থক্য প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও নুরুল আলমের জীবন সম্পর্কে আলোচনা করি তাহলে আমরা দেখতে পায়। এখন অনেকেই রেডিমেইড নেতা হতে চায়, টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চান। আওয়ামী লীগের রাজনীতি কখনো টাকার কাছে বিক্রি হয় না, হবে না এবং বিক্রি হতে দেব না। রেডিমেইড নেতা হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ নয়, সেজন্য হচ্ছে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টি। সেখানেই হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির পার্থক্য।
তিনি বলেন, বোয়ালখালী উপজেলার উন্নয়নের জন্য আমি সবসময় চেষ্টা করি সহায়তা করার। বোয়ালখালীবাসীর অনেক প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ভাঙন রোডে কর্ণফুলী নদীর তীরে ব্লক বসানো হয়েছে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মোছলেম উদ্দিন আহমদের অনেক স্বপ্ন ছিল। তৎমধ্যে অন্যতম হচ্ছে কালুরঘাট সেতু। কালুরঘাট সেতু ইতিমধ্যে নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। একনেকের প্রাথমিক স্তর অনুমোদন হয়েছে, চূড়ান্ত অনুমোদনও হবে। সড়ক এবং রেল দুটি মিলেই একটি সেতু হবে। কালুরঘাট সেতুর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজেই গুরুত্ব সহকারে দেখছেন।
নেতাকর্মীদের বিনয়ী হবার অনুরোধ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়, বিনয়ের কোন বিকল্প নাই। সমস্ত ভালো কাজ করেও যুবলীগ ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ বা অন্য কোন অঙ্গ সংগঠনের কয়েকজনের উদ্যত আচরণের কারণে আমাদের সমস্ত সাফল্য ম্লান হতে পারে না। কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে দল এবং সরকারের বদনাম করলে দল তাদের দায়িত্ব নেবে না, দলে তাদের কোন জায়গা হবে না।