নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
কক্সবাজারে গত ৪ দিন ধরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ সব ঘাট মাছের কেনাকাটায় সরগরম। সমুদ্রে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর জেলেদের জালে আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ায় খুশি জেলেরা। তার মধ্যে জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ, আকারও বেশ বড়। সাগর থেকে ট্রলার নিয়ে হাসিমুখে ফিরছে জেলেরা। পাশাপাশি রূপচাঁদা, লইট্টাসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের পরিমাণও কম নয়।
জেলেরা জানায়, মাছের সরবরাহ বাড়ায় এখন দামও কিছুটা কমতির দিকে। প্রতি ট্রলারে ৫০০ থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রথম ৩ দিনে ৪০ টনের বেশি মাছ এসেছে অবতরণ কেন্দ্রে। এর মধ্যে অর্ধেকই ইলিশ।
বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে কক্সবাজারের ‘এফবি মা-বাবার দোয়া’ নামের একটি ট্রলারেই ধরা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ। মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেটি ঘাটে প্রচুর ইলিশসহ নানা প্রজাতির প্রায় দেড় মণ মাছ নিয়ে ভিড়ে ট্রলারটি। জেলে-শ্রমিকরা মিলে মাছগুলো ট্রলার থেকে নামাতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা।
ট্রলার মালিক মো. আরিফের বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ট্রলার সাগরে চারদিন ছিল। আমাদের এক জালে ধরা পড়েছে দেড়শ মণ মাছ। এর মধ্যে ইলিশ রয়েছে প্রায় ৬ হাজার। এছাড়াও মাইট্যাসহ অন্যান্য মাছ আছে। এই মাছগুলো বিক্রি করে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা পাবো। ৬৫ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে সাগরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। এজন্য অনেক খুশি।’
তিনি বলেন, আশা করছি সামনে আরও অনেক মাছ মিলবে সাগরে। কারণ প্রচুর মাছ দেখা যাচ্ছে। সবগুলো ট্রলার ২/৩ হাজার মাছ নিয়ে ফিরছে। এতে জেলে, আড়তদার, শ্রমিক সবাই খুশি।
তবে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও চাহিদার চাইতে যোগান কম হওয়ার পাশাপাশি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দাম কিছুটা বেশি বলছেন, ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২/৩ দিনে অল্প-কিছু সংখ্যক উপকূলে ফিরলেও এখনো অধিকাংশ ট্রলার সাগরে অবস্থান করছে। আর ফিরে আসা ট্রলারগুলোর প্রতিটিতে কম বেশি ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধরা পড়েছে। এতে হাসি ফুটেছে জেলে, ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীদের মুখে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের চাহিদা বেশি। বেশির ভাগ ট্রলার এখনো সাগরে অবস্থান করছে। সবগুলো ট্রলার উপকূলে ফিরলে মাছের দাম কমতে শুরু করবে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক এহছানুল হক বলেন, ২৪ ও ২৫ তারিখ গত দুদিনে আমাদের অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ৩২ টন মাছ অবতরণ হয়েছে। এরমধ্যে ইলিশ মাছ ছিল ১৯ টন।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, কক্সবাজারে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৩ হাজারের বেশি। নৌযান রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার।