হুমাইরা তাজরিন »
সিআরবির শিরীষতলায় বইমেলা প্রাঙ্গণ ছিল লোকে লোকারণ্য। গতকাল আবৃত্তি উৎসবের কবিতার ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হচ্ছিলো বইমেলা জুড়ে।
মনিরুল ইসলাম এসেছেন নতুন বইয়ের সন্ধানে। উঠতি লেখকদের লেখা পড়তে পছন্দ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু তরুণ কবি ভালো লেখেন। আমি তাদের লেখা অনুসরণ করি। এর মধ্যে নারীরাও আছেন। নিজেও টুকটাক লেখালেখি করি শখের বশে। তাই সবার লেখা পড়তে শিখতে ভালো লাগে। ’
তাজিরা হক নামের এক তরুণ পাঠক বলেন, ‘প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে বই পড়ার প্রবণতা কমছে। বই পড়ার যে উপকারিতা তা থেকে আমরাই নিজেদের বঞ্চিত করছি। বইমেলার মতো আয়োজনগুলোই আমাদের বইমুখী করে। বই পড়ার, বইয়ের সাথে থাকার প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলে।
গতকাল ছিলো বইমেলার দশমদিন। শিরীষতলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীদের একের পর এক পরিবেশনা চলছে। কেউ কংক্রিটের বেঞ্চি, কেউবা গাছের শেকড়ে, কেউ পেতে রাখা বেঞ্চিতে বসে কবিদের কালজয়ী কবিতাগুলোর আবৃত্তি শুনছেন। কবিতা শোনা আর বই বিকিকিনির পাশাপাশি বাহারি খাবারে মজেছেন তারা। যেখানে বিক্রি হচ্ছে নানা মুখরোচক সব খাবার। পরিবারের সাথে ঘুরতে আসা শিশুরাও মজেছে বইমেলার নতুন সংযোজন শিশু কর্নারে। যেখানে শিশুদের প্রিয় কয়েকটি রাইডে চড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
দশম দিনের আয়োজনে ছিলো ‘আবৃত্তি উৎসব ’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আবৃত্তি শিল্পী ডালিয়া আহমেদ।
আলোচক ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল মালেক। উৎসবে সভাপতিত্ব করেন কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার। উৎসব সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মো. মুজাহিদুল ইসলাম। উৎসবের আয়োজনে ছিলো দলীয়, দ্বৈত ও একক কবিতা আবৃত্তি পরিবেশনা। এছাড়াও ছিলো কবিতা পাঠের আয়োজন।
ধারাবাহিক আয়োজনে আগামী দিন থাকবে ‘গণমাধ্যম সম্মিলন’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। সভাপতিত্ব করবেন সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ।
দশম দিনে মেলায় এসেছে বেশ কয়েকটি বই। অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত মোশতাক আহমদ রচিত ‘ আবুল হাসান ও ঝিনুকের সন্ধানে’। প্রথমা প্রকাশনী থেকে জিয়াউদ্দিন এম চৌদুরী রচিত ‘দুই জেনারেলের হত্যাকাণ্ড ১৯৮১-র ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান’, মতিউর রহমান সম্পাদিত ‘পঁচাত্তরের অস্থির সময়’, আলী রিয়াজ রচিত ‘দ্যা ক্যারাডে বাংলাদেশ’স ২০২৪ ইলেকশন’, মহুয়া রউফ রচিত ‘দখিন দুয়ার খোলা’। কথাপ্রকাশ হতে প্রকাশিত হয়েছে সোহেলী আক্তার রচিত ‘হরিশংকর জলদাসের ছোটগল্প’, নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর রচিত ‘ভেগাসের রঙ্গশালায় বিদেশিনীর সঙ্গে’, বিনয় বর্মন অনূদিত ‘ ইয়োন ফসসে আ্যালিসের অগ্নিগাথা’, শেখ সাদী রচিত ‘ইসলামে প্রথম’। শৈলী প্রকাশন থেকে ববি বড়ুয়া রচিত ‘উন্নয়ন ও গণমানুষের প্রত্যাশা’।
এবারের বইমেলা চলবে ২ মার্চ পর্যন্ত। ছুটির দিনে সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯টা এবং অন্যান্য দিনে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।