দেয়াঙ

পাঠ প্রতিক্রিয়া

নূরুননবী শান্ত »

‘দেয়াঙ খুলে- ‘মাহমুদ নোমান বলছি’ পড়ার পর বেশ দীর্ঘ সময় মাথার ভেতরে তাঁর গদ্য ঘুরতে থাকল। ভেবেছিলাম চোখ বুলিয়ে রেখে দেব পরে পড়ার জন্য। কিন্তু না। রেখে দেওয়া সম্ভব হলো না। জরুরি কাজগুলো ভুলেই যেতে হলো। কেবলই মাহমুদ নোমান এর গদ্যের কারণে নয়; আমার শিশুকাল এভাবে, এত স্পষ্ট, ছবির মতো সুন্দর অথচ মর্মবিদারি রূপে আর কোনো ছবি, চলচ্চিত্র কিংবা লেখায় দেখতে পাইনি। মগজের ভেতরে টের পাচ্ছিলাম আনন্দ, অথচ বুকের ভেতর থেকে গুমোট বেদনা বের হচ্ছিল অশ্রুরূপে।
চোখ কেন ভিজে আসছিল- জানি না! কতকিছুই তো কোনোদিন জানাই সম্ভব হবে না। মাছ ভালোবেসে প্রিয় মাছ সংখ্যা ‘দেয়াঙ’ করা চাট্টিখানি কথা নয়- বিশেষ করে তখন, যখন মাছ মানে কেবলি পুষ্টি ও অর্থনীতি – পুঁজির পুঞ্জ দিয়ে সমস্ত নদী-জলাশয়-সমুদ্রের শ্বাস যখন রুদ্ধ করা হয়, যখন টুটি টিপে ধরা হয় আবহমান বাংলা বদ্বীপের পুরো মৎস-সংস্কৃতির।
মাহমুদ নোমান স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে, জীবনের দায় অবহেলা করে তবু কেন সাহিত্য করে যাচ্ছেন – দেয়াঙ বের করছেন! মাঠে মাঠে বিদ্ব্যৎজনদের দুয়ারে গিয়ে কেন সাক্ষাৎকারগুলো নেওয়ার জন্য সময়, শ্রম ও মেধা খটিয়েছেন!
চট্টগ্রামের এক প্রান্তিক জনপদকে কেন্দ্র বানাতে পেরেছেন তিনি- যেখানে দেশের অধিকাংশ জেলার প্রিয় মাছ ও মাছ সংস্কৃতি আর্কাইভ হয়ে রইল। হয়তো মায়ের আশির্বাদ আছে বলে- কেবল জন্মদাত্রী মায়ের আশির্বাদ নয়, এই জলার দেশরূপী মায়েরও। পড়ে দেখতে পারেন, দেয়াঙ- প্রিয় মাছ সংখ্যা। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা, মাহমুদ নোমান।

দেয়াঙ প্রিয় মাছ সংখ্যা
সম্পাদক: মাহমুদ নোমান
আনোয়ারা সদর, চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত
প্রতি কপির বিনিময়: ৩৫০টাকা