সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রস্তুত নির্বাচনী ট্রেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছানোর আনুষ্ঠানিক যাত্রার ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। অবশ্য রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনি এ ট্রেনে চড়ার জন্য আরও প্রায় দুই সপ্তাহের মতো সময় হাতে পাবে। বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন ভোট আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সাংবিধানিক সংস্থাটির প্রধান কাজী হাবিবুল আউয়াল। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ভোটগ্রহণের সময় নির্ধারিত হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে ৬ জানুয়ারিকে ঘিরেই জোরালো আলোচনা রয়েছে।
শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে শর্তহীন সংলাপ অনুষ্ঠানে দেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির দেওয়ার পরপরই তফসিলের বার্তা রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অবশ্য নির্বাচন কমিশন বলেছে, ওই চিঠি নিয়ে তাদের কোনও ‘মাথাব্যথা’ নেই। তারা সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকেই ভোটের পথে এগোচ্ছে।
বুধবার তফসিল ঘোষণা হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আরও ১০-১২ দিন সময় পাবে। তফসিলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য সাধারণত ১০-১২ দিন সময় দেওয়া হয়ে থাকে। অবশ্য এর আগে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের কোন নেতার সইয়ে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। খবর বাংলাট্রিবিউন।
সংবিধান অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৯০ দিনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কাজী হাবিবুল আউয়াল তার প্রায় সব কাজই গুছিয়ে এনেছেন। রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে গত ৯ নভেম্বর সাক্ষাৎ করে সিইসি তার নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি অবহিত করেছেন। সাক্ষাতের পর সিইসি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ওপর যে (নির্বাচন অনুষ্ঠানের) সাংবিধানিকভাবে দায়িত্ব আরোপিত হয়েছে, বাধ্যবাধকতা— সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে বদ্ধপরিকর।’ পরদিন এক অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে পুরো দেশ মাতোয়ারা হয়ে আছে। পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিদিন বক্তব্য হচ্ছে। একটা ডাইমেনশনও পেয়ে গেছে।’
নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছে, নভেম্বরের প্রথমার্ধে তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। জানুয়ারির প্রথম দিকে তারা ভোটের তারিখ নির্ধারণ করবে। সে হিসাবে প্রথমার্ধের শেষ দিন ১৫ নভেম্বরই (বুধবার) তফসিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে। তফসিলের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে ব্যতিব্যস্ত রয়েছে ইসি সচিবালয়। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা অফিস করেছেন। তারা সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকও করেছেন বলে জানা গেছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে সংলাপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির বিষয়ে কনসার্ন কিনা, বা এই চিঠি তফসিলের প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘অবশ্যই না। কোনও প্রভাব পড়বে না।’
নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, ‘প্রথমে কথা হচ্ছে সংলাপের চিঠি কিনা, এ বিষয়ে কমিশন অবহিত নয়। কমিশনের কাছে কিছুই আসেনি। কমিশন তার নিজস্ব গতিতে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার আলোকে যেভাবে রোডম্যাপ হয়েছিল, সেভাবে অগ্রসর হচ্ছে।’
এদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সরকারের পদত্যাগ ইস্যুতে বিরোধী দলগুলো অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকলেও সরকারি দল আওয়ামী লীগের মধ্যে নির্বাচনি আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। ইসির তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীদের মিছিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দলটির কেন্দ্র থেকে। মঙ্গলবার দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।