নিজস্ব প্রতিবেদক»
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কারণে বদলে যাচ্ছে কর্ণফুলীর নদীর ওপারের উপজেলা আনোয়ারা। এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে টানেলের সার্ভিস এরিয়া।
প্রায় ৯৫ একর জায়গা জুড়ে নির্মিতব্য এ সার্ভিস এরিয়ার থাকছে একটি টানেলের রেপ্লিকা, কনভেশন সেন্টার, হেলথ সেন্টার, হেলিপ্যাড, মসজিদ, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনসহ চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে একটি জাদুঘর। ৩০টি রেস্ট হাউজ এবং একটি ভিভিআইপি বাংলো। এই ভিভিআইপি বাংলোতেই গড়ে উঠছে প্রধানমন্ত্রীর অতিথিশালা।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, আনোয়ারা এলাকার টানেলের দক্ষিণে পার্কি খালের উত্তরে নির্মিত হচ্ছে সার্ভিস এরিয়া। বেশ তোড়জোড় করেই চলছে সার্ভিস এরিয়ায় নির্মাণ কাজ। পার্কি খালেও নির্মাণ করা হয়েছে একটি কালভার্ট। এর দক্ষিণে রয়েছে তিনটি রেস্ট হাউজ। পুরো এলাকা নিরাপত্তা বেস্টনির দেওয়াল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এর বাইরে ভিভিআইপি বাংলোর সামনে একটি সুইমিংপুলসহ আলাদা নিরাপত্তা বেস্টনী রাখা হয়েছে।
এ সার্ভিস এরিয়া নির্মাণে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস এরিয়ার কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছি। টানেল উন্মুক্ত করলেও সার্ভিস এরিয়া আপাতত উন্মুক্ত করা হবে না। সার্ভিস এরিয়ার কাজ শেষ করার পর আমরা তা সেতু বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবো। তারা নির্ধারিত সময়ে এটি উন্মুক্ত করে দিলে পাবলিক নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়ে সেখানে থাকতে বা অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে শেষ পর্যায়ের কাজ কোনোভাবে যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা ওখানে আপতত কাউকে এলাউ করছি না।’
সার্ভিস এরিয়া নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টানেলের প্রকল্পের মধ্যে সার্ভিস এরিয়া পরে সংযোজন করা হয়েছে। তাই ওটা সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলতে পারবো না। তবে এটা বলতে পারি, সার্ভিস এরিয়ায় টানেলের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় যা যা প্রয়োজন, তার সবই রাখা হবে। টানেল ও সার্ভিস এরিয়া মূলত সেতু বিভাগের। তাই কাজ শেষে আমরা সেটা তাদের বুঝিয়ে দেবো।’
সার্ভিস এরিয়ার কর্মযজ্ঞ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘টানেলের কারণে আনোয়ারার অনেক পরিবর্তন হবে। কিন্তু সেখানে উন্নয়ন অনুপাতে তেমন কোনো ভালো হোটেল বা রিসোর্ট নেই। এ চিন্তাভাবনা মাথায় রেখেই এ সার্ভিস এরিয়া নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে আনোয়ারা অংশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভালো প্রভাব পড়বে। প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে এ সার্ভিস এরিয়া। এখানে ভিভিআইপি বাংলো করা হচ্ছে যেটিতে প্রধানমন্ত্রী ঘুরতে এলে থাকবেন বলে জেনেছি। এ সার্ভিস এরিয়ার ব্যয় টানেলের প্রকল্প ব্যয়ের ভেতরেই রয়েছে। তাই আলাদা করে ব্যয় কত হবে তা জানা নেই।’
প্রধানমন্ত্রী থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কথা হয় কর্ণফুলী টানেল সাইট অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভিভিআইপি বাংলোতে প্রধানমন্ত্রী থাকার ব্যবস্থা রেখেই করা হচ্ছে। এখানে প্রধানমন্ত্রী বা সর্বোচ্চ মন্ত্রী পর্যায়ের অতিথিরা থাকবেন। এছাড়া সাধারণের জন্য রেস্ট হাইজ করা হচ্ছে। সেখানে তারা পে (ভাড়া পরিশোধ করে) করে থাকতে পারবেন। যেটি প্রধানমন্ত্রীর জন্য তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা গাইডলাইন মেনে কাজ করা হচ্ছে। এরপরও যখন প্রধানমন্ত্রী ওখানে থাকতে আসবেন, তখন ওনার নিরাপত্তা সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরও যা যা করা দরকার তা করা হবে।’