শুভ্রজিৎ বড়ুয়া »
প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয়রোধে নেওয়া এক লাখ প্রিপেইড মিটার বসানোর প্রকল্প মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হচ্ছে। জাপান থেকে আনা এসব প্রিপেইড মিটারগুলো গ্রাহকরা পাবেন ডিসেম্বর থেকে। এ প্রকল্প শেষ হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে আরও ৪ লাখ ৩৮ হাজার প্রিপেইড মিটার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল)।
সংস্থাটির সূত্রে জানা যায়, প্রিপেইড মিটার বসানোর পাইলট প্রকল্প শুরু হয় ২০১৫ সালে। জাইকার অর্থায়নে ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া এ প্রকল্পটিতে ৬০ হাজার সংযোগে প্রিপেইড মিটার সংস্থাপন করা হয়। প্রকল্পটি ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ‘আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ নেওয়া হয়। ২০২১ সালের ১৮ মে সংস্থাটির এক লাখ গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার প্রকল্পটি প্রশাসনিক অনুমোদন পায়। ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে প্রিপেইড মিটারের জন্য গ্রাহকদের আবেদন গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ চলতি বছরের জুনে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত আবেদন পড়েছে প্রায় ৮৬ হাজার ৬ শত। এছাড়া আবেদন করা ৩৩ হাজারের মতো গ্রাহক নকশা জমা দিয়েছে।
অন্যদিকে সংস্থাটি প্রকল্প শুরুর বিশ (২০) মাস পর ১৪ অগাস্ট পরামর্শক নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করে। ২৮ সেপ্টেম্বর দরপত্র জমাদানের শেষ সময় থাকলেও ঠিকাদারদের অনুরোধে নভেম্বরের ২ তারিখ পর্যন্ত সময় বর্ধিত করে কেজিডিসিএল। ওদিনই দরপত্র খোলা হয়। দেখা যায়, জাপানের টয়োকিকি কোম্পানি লিমিটেড ও চায়নার এক্সিম কোম্পানি লিমিটেড নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও তারা প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠান দুটির দরপত্র বাতিল করা হয়। এরপর চলতি বছরের মার্চে পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে জাপানের টয়োকিকি কোম্পানিকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হলেও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদের কাজ বুঝিয়ে দিতে আরও সময় চায় সংস্থাটি।
সার্বিক প্রসঙ্গ নিয়ে জানতে চাইলে এ প্রকল্পের পরিচালক ও সংস্থাটির উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমরা ঠিকাদার নির্বাচন করলেও তাদের কাজ বুঝিয়ে দিতে পারিনি। আশা করছি, দুই-তিন দিনের মধ্যে ডিপিপির মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন পাবো। অনুমোদন হওয়ার পর আগামী মাসে ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কাজ হাতে পাওয়ার পর গ্রাহকদের নকশাগুলো যাচাই-বাছাই করে তাদের প্রিপেইড মিটার লাগানোর সময় জানিয়ে দিবে।’
কবে নাগাদ গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটার পাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে প্রিপেইড মিটার লাগানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ বুঝে পাওয়ার পর জাপান থেকে কনটেইনারে করে আলাদা আলাদা চালানে মিটারগুলো আনবে এবং গ্রাহকদের সংস্থাপন করবে। এক্ষেত্রে তারা প্রতি চালানে ১৫ থেকে ২০ হাজার মিটার আনবে। গ্রাহকদের যারা এখনও আবেদন করেনি, তাদের আবেদন জমা দেওয়ার সুযোগ আছে। এ প্রকল্প শেষ করার পর আমাদের বাকি ৪ লাখ ৩৮ হাজার মিটারেও প্রিপেইড সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।