আগামী জানুয়ারি মাসে টিকা প্রাপ্তির সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে টিকা দান ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। করোনা টিকা দান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত কিছু কমিটি কাজ শুরু করে দিয়েছে মর্মে পত্রিকান্তরে প্রকাশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, কোডিভ-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় পর্যায়ে ৩টি কমিটি গঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্সের সভাপতি হচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তৃণমূলে ভ্যাকসিন প্রদানের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে উপজেলা কমিটির ৪ দফা কাজের কথা বলা হয়েছে। টিকা প্রদান করা হবে ৪ ধাপে। উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড-অ্যাস্টোজেনকার টিকা একই সাথে পাবে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রায় ৩ কোটি ডোজ টিকার চালান বাংলাদেশে আসবে পর্যায়ক্রমে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে কোভ্যাক্স নামের একটি উদ্যোগ তৈরি হয় যার মাধ্যমে এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি ২০২১ সালের মধ্যে ২০০ কোটি ডোজ টিকা পাবে যাতে প্রতিটি দেশের ২০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়। আমাদের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ ধরে জনপ্রতি ২ ডোজ হিসেবে মোট ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা কোভ্যাক্স থেকে পাওয়ার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, আগামী জানুয়ারি মাসে দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসবে। এ দিকে করোনার টিকা বিষয়ক জাতীয় পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, করোনার টিকা গ্রহণকারীর নিবন্ধন হবে অনলাইনে, এ সময় জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্য যাচাই করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ টু আইয়ের কর্মকর্তারা নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নির্ধারণে কাজ করছে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, দেশবাসী কোভিড-১৯ থেকে পরিত্রাণ পেতে টিকা প্রাপ্তির আশায় দিন গুণছে। সরকার ও বেশি সংখ্যক ভ্যাকসিন আনতে বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ রাখছে।
টিকার জন্য নিবন্ধনে যাতে কোন জটিলতা কিংবা মানুষ যাতে হয়রানির সম্মুখিন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। কারা প্রথম টিকা পাবেন তা ইতিমধ্যে সরকার থেকে বলা হয়েছে। বৃদ্ধ এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে সরকার সচেতন রয়েছে বলে জানানো হয়। করোনা টিকা যেহেতু ২টি ডোজ দেওয়া হবে সেজন্য পৃথক রংয়ে নতুন ২টি কার্ড তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।
করোনা টিকা সকল মানুষকে দিতে হবে, এটি একটি বিপুল কর্মযজ্ঞ। দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সকল পর্যায়ে সচেতনতা এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ জরুরি। ভ্যাকসিন নির্ধারিত তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে আগেভাগেই সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করতে হবে। টিকা দানে যারা যুক্ত থাকবেন তাদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। কোনরূপ অনিয়ম-অদক্ষতা যাতে এই বিপুল কর্মযজ্ঞে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের যে অব্যবস্থাপনা ছিলো তার যথার্থ মূল্যায়ন করে আগামী দিনের পথচলা ঠিক করে নিতে হবে।
মতামত সম্পাদকীয়