বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হওয়ার পর প্রথম ছুটির দিন ছিল শুক্রবার। সেইদিনটা তাই সবাই বেছে নিয়েছিল পরিবার আর বন্ধুদের নিয়ে টানেল দেখতে। অনেকেই নিয়ে গেছেন নিজস্ব গাড়ি । যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নেই, তাদের জন্য ছিল গণপরিবহন। বিভিন্ন বাস ও মাইক্রোবাস ৫০, ১০০ ও ২০০ টাকায় টানেল দেখার সুযোগ করে দিতে দেখা গেছে।
শুক্রবার বিকেলে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে দেখা যায়, চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে টানেল সংযোগ সড়কে মানুষের ঢল নেমেছে। মানুষ আর গাড়ির ভিড়ের কারণে তিল ধারণের ঠাঁইও যেন নেই। স্থায়ী দোকানপাটের পাশাপাশি অস্থায়ী দোকান বসিয়েও চলেছে কেনা-বেচা।
পত্রিকান্তরে জানা গেছে, চাতরি চৌমুহনী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে যাত্রীদের টানেল নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক নবী হোসেন। টানেল চালু হওয়ার পর থেকে শুধু এখানেই ভাড়ায় গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি। কয়েকবার করে টানেলের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে যাত্রী আনা-নেওয়া করছেন। আনোয়ারা প্রান্ত থেকে পতেঙ্গা এবং পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে আনোয়ারায় আনতে জনপ্রতি ভাড়া নিচ্ছেন ২০০ টাকা । শুধু তিনি নন তাঁর মতো আরও অনেকে এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। বাসচালক জাহাঙ্গীর আলমও যাত্রীদের নিয়ে টানেলে আসা যাওয়া করছেন। তিনি সাংবাদিককে বলেন, ‘আনোয়ারার চাতরি চৌমুহনী থেকে প্রতি জন যাত্রীর কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে টানেল হয়ে পতেঙ্গা ঘুরে পুনরায় আনোয়ারা আসতে ৫০ টাকা করে নিচ্ছি।’
এ পরিস্থিতিতে যা হয় তাই হয়েছে। অধিক যানবাহনের চাপে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা-ও আবার টানেলের ভেতরে। শুক্রবার রাত নয়টার পর টানেলে বাসের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেছে একটি প্রাইভেট কার। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। এতে টানেলের পাশের দেয়ালের টাইলস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাইভেটকারটি টানেলের আনোয়ারা প্রান্ত হয়ে পতেঙ্গার দিকে আসছিল। এ সময় পেছন দিক থেকে বাস ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর টানেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।
এর আগে মঙ্গলবার টানেলের ভেতর যাত্রীবাহী বাস প্রাইভেট কারের পেছনে ধাক্কা দেয়। ২৯ অক্টোবর দিবাগত রাত ৩টার দিকে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টানেলের টোল প্লাজায় প্রাডো গাড়ির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কের রেলিং। এ সময় ধাক্কায় ভেঙে যায় প্রাডো গাড়িটির সামনের কিছু অংশও।
একই ভিড় লক্ষ করা গেছে গতকাল শনিবারেও। এদিন টানেলের দু প্রান্তের মুখে প্রচ- যানজট তৈরি হওয়ায় টানেলের ভেতরেও অনেকে গাড়ি নিয়ে আটকা পড়েছিলেন। হুজুগে বাঙালির জন্য অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। এখন সে ধরনের ঘটনাই ঘটে চলেছে। অহেতুক যানজট তৈরি করছে টানেল এলাকায়। নতুন কিছু দেখার আগ্রহ থাকা দোষের নয়। তবে তা যেন বিপদের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকেও লক্ষ রাখা বাঞ্ছনীয়। এখন প্রশাসন থেকে প্রচার চালানো উচিত যাতে সবাই একসঙ্গে হুমড়ি খেয়ে না পড়ে। টানেলে নিরাপদে যান চলাচল নিশ্চিত করতে কিছু ব্যবস্থা নিতেই হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ