নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১৪৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। যা চলতি বছরের একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত। নতুন করে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ ‘ভয়ঙ্কর’ হয়ে উঠেছে। শনাক্ত বাড়ার সাথে সাথে মৃত্যুও বেড়েছে চলতি মাসে। জুলাইয়ের ২১ দিনে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একদিনেই মোট ১৪৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে মিসকাত (১৪) নামে এক কিশোরে মৃত্যু হয়েছে। জ্বর নিয়ে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিনই মারা যান তিনি। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’ উল্লেখ আছে। বোয়ালখালীর কধুরখীল ইউনিয়নের মধ্যম কধুরখীল গ্রামের ওসমান ড্রাইভারের ছেলে মিসকাত। কধুরখীল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
জানা গেছে, চার-পাঁচদিন ধরে জ্বর, গলাব্যথা, বমি ভাব ছিল মিশকাতের। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হলেও পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের শুরু থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট ১ হাজার ৯২৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন মোট ২২ জন। এদের মধ্যে ৯ শিশু, দুই কিশোর, ছয়জন পুরুষ এবং পাঁচজন নারী আছেন। শুধুমাত্র জুলাই মাসের ২১ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৫৮ জন।
আক্রান্তের পাশাপাশি জুলাইয়ে রেকর্ড পরিমাণ মৃত্যুও হয়েছে। ২২ জনের মধ্যে ১৩ জনই মারা গেছেন গত ২১ দিনে। জানুয়ারিতে ৩ জন এবং জুন মাসে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বেশির ভাগ রোগীর প্লাটিলেট লাগছে না
চমেক হাসপাতালে গতকাল ৫ ওর্য়াডে প্রায় ৪৫ জনের মত রোগী ভর্তি ছিলেন। তারমধ্যে মেডিসিন বিভাগের ১৩ ওয়ার্ডে ১৩ জন এবং ১৪ ওর্য়াডে ৪ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। সেসব ওর্য়াডে কর্মরত নার্সদের সাথে কথা বলে জানা যায় বেশিরভাগ রোগীর প্লাটিলেট লাগছে না।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চমেক হাসপাতালের ব্লাড ট্রান্সফিউশনের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা তানজিলা তাবিব চৌধুরী। তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে এখন। তবে সেই তুলনায় রোগীদের প্লাটিলেট দিতে হচ্ছে না। একদিনে দুজনকে প্লাটিলেট দিতে হয়নি এখনো। কারণ আমরা কেবল ১০ হাজার প্লাটিলেট নামলে সেই রোগীদের কেবল সেবা দিই।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু হলে হলে অনেক রোগীর রক্তে প্লাটিলেট কমে যায়। তখন সেই রোগীকে একটি ডোনারের সহযোগিতায় এফেরেসিস মেশিন দিয়ে এ প্লাটিলেট দেওয়া হয়।
প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পাচ্ছে রোগীরা
কিছুদিন আগেও চমেক হাসপাতালে স্যালাইনসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ না পাওয়ার কথা জানাই রোগীরা। তবে গতকাল ওষুধ পাওয়ার কথা জানিয়েছে রোগীরা। ফটিকছড়ির থেকে আসা আলিপ হোসেন বলেন, ‘৪ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। তেমন ওষুধ লাগেনি। স্যালাইন বেশি লাগছে। একটিও বাইরে থেকে কিনতে হয়নি। হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে। ’
চমেক হাসপাতালের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো শামীম আহসান বলেছেন, প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। আমরাও প্রস্ততি নিয়ে রেখেছি। বর্তমানে পর্যাপ্ত ওষুধের ব্যবস্থা রয়েছে।