নিজস্ব প্রতিবেদক »
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে যে কর্মসূচি পালন করছে তার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। তারা চায় সংবিধান সম্মতভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন না হয়ে তাদের পছন্দ মতো ব্যবস্থা অনুযায়ী নির্বাচন হোক, যাতে তারা ক্ষমতায় যেতে পারে। এজন্য তারা আওয়ামী লীগকে বার বার খোঁচা দিচ্ছে। তাদের জানা উচিত ম্যাচে খোঁচা দিলে আগুন জ্বলে উঠে। আওয়ামী লীগকে খোঁচা দিলেও আওয়ামী লীগ জ্বলে উঠবে। জনগণের শান্তির জন্য এবং তাদের জানমাল রক্ষায় আওয়ামী লীগ রাজপথে নেমেছে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথেই থাকবে।
শনিবার বিকেলে নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে দেশব্যাপী সন্ত্রাস অরাজকতা ও নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টার প্রতিবাদে জনগণের জানমাল রক্ষায় মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি বলেছিল ১০ ডিসেম্বরের পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় হবে। ঐদিন থেকে খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। তারেক জিয়া ঢাকায় ফিরবেন। কিন্তু কই? আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে। খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশ চলছে না, তারেক জিয়াও দেশে ফিরতে সাহস করছে না। তারা সে দিন ১০ লক্ষ মানুষের সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল। আমরা বলেছিলাম ১০ লক্ষ কেন আরো বেশি মানুষের সমাবেশ করুন, আমরা তাদেরকে বলেছিলাম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠ বা বিশ্ব ইজতেমা মাঠ এমনকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করা হোক। কিন্তু বিএনপি জেদ ধরেছিল নয়াপল্টনে রাস্তার উপর মহাসমাবেশ করবে। নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সমাবেশ হলে ৩০ হাজার মানুষের সমাগম সম্ভব। শেষ পর্যন্ত তারা গোলাপবাগে গরুর মাঠে সমাবেশ করলেন। ওখানে বড়জোর ২৫ হাজার মানুষের সমাগম সম্ভব। তবুও ধরে নিলাম ৪৫ হাজার মানুষের সমাবেশ হয়েছে। এতেই কি তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে ধাক্কা দিতে পেরেছে? জনগণ জানে ঐদিন বিএনপি অফিস তল্লাশি করে কয়েকশত বোমা, কয়েক লক্ষ পানির বোতল এবং বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বর ঢাকা নগরীকে অচল করে দিয়ে নাশকতার জোয়ারে ভাসিয়ে দেওয়া। এখন বলতে ইচ্ছে হয় বিএনপি বড় বড় কর্মসূচি দিয়ে এবং বড় বড় সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে আসলে ঘোড়ার ডিম পেরেছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে গিয়ে তাদের কোমর ভেঙে গেছে।
তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ফখরুল ইসলাম ও মির্জা আব্বাস জেল খেটে এসে এখন লাইনে এসেছে। তারা এখন বলছেন, আওয়ামী লীগকে এখন ধাক্কা দেবেন না, আন্দোলন চালাবেন। তবে কিসের আন্দোলন তাও তারা জানেন না। তারা বলছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা জাতীয় সরকারের অধীন ছাড়া কোন নির্বাচনে যাবেন না। পৃথিবীতে শুধু একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া আর কোথাও জাতীয় নির্বাচন হয় না। এমনকি আফ্রিকাতেও নয়। বাংলাদেশে নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক বিশ্বের সংবিধানিক ধারায় যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি অনেক ষড়যন্ত্র করেছে, এখনো করছে। সুযোগ পেলে আবারও ফনা তুলবে। তাই সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আমি বিশ্বাস করি জনগণকে জাগাতে পারলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ধারাবাহিক ৪র্থ বারের মত দেশের হাল ধরতে পারবেন।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, যতদিন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে। বাংলাদেশ কখনো শ্রীলংকা হবে না, সোমালিয়া হবে না, বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উদিত সূর্য।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, বিএনপি একাধিক বার ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপির ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়, ক্যান্টনমেন্ট। তারা তাদের স্বার্থে সংবিধানকে কাঁটাছেড়া করেছে। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বলেছিলেন রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে তোলা হবে- মানি ইজ নো প্রবলেম। একারণে তারা ক্ষমতায় এসে কখনো জনগণের কল্যাণ চায় নি। বরং নিজেদের আখের গুছিয়েছে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, দ-িত পলাতক আসামি তারেক জিয়া একজন বেকার হয়েও লন্ডনে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন। তার বৈধ আয়ের কোন উৎস নাই। চাঁদাবাজিসহ বিভিন্নভাবে অবৈধ উপার্জনের মধ্যদিয়ে তিনি রাজসুখে আছেন এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে আমরা ঐক্যবদ্ধ। আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন আমরা তাকে বিজয়ী করতে বদ্ধপরিকর।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদক ম-লীর সদস্য বদিউল আলম, অবদুচ সালাম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর প্রমুখ।