মিমি সুপার মার্কেট এলাকা থেকে প্রবর্তক মোড়ের দিকে আসার রাস্তাটি অনেকটাই ঢালু। গোলপাহাড় মোড় থেকে প্রবর্তক মোড়ের দিকে যাওয়া রাস্তাটা এবং পাঁচলাইশ থেকে প্রবর্তক মোড়ের দিকে আসা রাস্তটিও ঢালু। অর্থাৎ চারপাশ থেকে এলাকাটি ঢালু হওয়ায় আশপাশের এলাকাগুলোর পানি এসে জড়ো হতো প্রবর্তক মোড়ে। ফলে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে মুহূর্তের মধ্যে এখানে পানি জমে যেতো।
এতদিন পানি নেমে না যাওয়ার পেছনের কারণ ছিল হিজড়া খালের ওপরের ব্রিজটি ছিল নিচু। আর ব্রিজের নিচ দিয়ে ওয়াসাসহ বিভিন্ন সংস্থার কিছু বড় বড় পাইপ ছিল। এসব পাইপের কারণে পানি চলাচল করতে পারতো না। একই সাথে খালটি এক সময় ৪০ থেকে ৪৫ ফুট চওড়া থাকলেও এখন তা ১৫ থেকে ২০ ফুটে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিক কারণে পানি নামতে পারতো না এবং জলাবদ্ধতা তৈরি হতো। আধঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে অন্য কোথাও হাঁটু সমান পানি জমলেও প্রবর্তক মোড়ে জমে কোমর সমান। আর বৃষ্টিপাত যদি দীর্ঘক্ষণ চলে তাহলে গলাসমান পানি জমতে সময় লাগত না।
এখন এর অনেকটাই ভরাট করা হয়েছে। ‘রুপালি গিটার’ যে স্থানে বসানো হয়েছে সেই স্থানটি আগে নিচু ছিল। এছাড়া প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশটি সবচেয়ে নিচু ছিল। ভবনটি ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে সেই স্থানটিও অনেক উঁচু করা হয়েছে। অর্থাৎ সমগ্র মোড়টি আশপাশের রোডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে উঁচু করা হয়েছে, যাতে পানি জমে পুকুর সৃষ্টি হতে না পারে। সেই সাথে হিজড়া খালের ওপর ব্রিজটি আগের ব্রিজের তুলনায় ১০ ফুট উঁচু করা হয়েছে। ব্রিজের ওপরাংশের সাথে আশপাশের এলাকার ঢালু মেলাতে সেই এলাকাগুলোও উঁচু করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রবর্তক মোড়ে বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে কালভার্ট ও মোড়ের উন্নয়ন কার্যক্রম। এ বিষয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী সুপ্রভাতের প্রতিনিধিকে বলেন, হিজড়া খালের ওপর আগে যে ব্রিজটি ছিল তা ভেঙে পূর্বের অবস্থা থেকে ১০ ফুট উঁচু করা হয়েছে। একই সাথে মিমি সুপার মার্কেট এবং গোলপাহাড় এলাকা থেকে পানির ¯্রােত যাতে মোড়ে আসতে না পারে, সেজন্য হিজড়া খালের সাথে সংযোগ ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এসব ড্রেন নির্মাণের কারণে পানি আর মোড়ে জমবে না, আশা করছি। আগে সরু ড্রেন ছিল। এখন বড় ড্রেন দিয়ে পানিগুলো সরাসরি হিজড়া খালে পতিত হবে।’
আগামীতে হয়তো প্রবর্তক মোড়ে পানি জমবে না। কিন্তু এই এলাকায় আগে যে-পানিটা জমতো, সেই পানি এখন অন্য কোথাও গিয়ে জমবে কিনা, তা দেখার বিষয় হয়ে আছে। সেজন্য কিছু সংযোগ ড্রেন নির্মাণ করতে হবে। ভরা বর্ষায় নগরীর পানি যাতে খালগুলো হয়ে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়তে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কর্ণফুলির ড্রেজিং না হলে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের শতভাগ সুফল আমরা পাবো না। অন্তত আগামী বর্ষা থেকে যেন সুফল পাওয়া যায় সে লক্ষে কাজ করতে হবে।
মতামত সম্পাদকীয়