নিজস্ব প্রতিবেদক »
বইমেলা আরেক নাম হলো লেখক পাঠকের মিলন মেলা। সপ্তাহিক বন্ধের দিনে এ মেলা আরও প্রানবন্ত হয়ে ওঠে। শুধু লেখক বা পাঠকই নন, দর্শণার্থীরাও আসে এই মেলায় ঘুরতে। মেলায় এসে অনেকে বই প্রেমিক হয়ে উঠে। তেমনই এক বই প্রিয় মানুষের দেখা মেলে কাজীর দেউড়ি অমর একুশে বই মেলায়।
অনিন্দ্য বারই তার নাম। ২০২০ সালে বইমেলা ঘুরতে এসে শখের বসে দুটি বই কিনে নেন। এর কিছুদিন পর শুরু হয় করোনা তাণ্ডব। পৃথিবী থমকে যায়। করোনা সংক্রমণ রোধে থাকতে হয়েছে ঘরে। সেই সময়ে মেলা থেকে কেনা বই দুটি বারবার পড়েছেন। এতেই বইয়ের প্রতি ভাল লাগা শুরু। গত বছরে বিভিন্ন উপায়ে কেনেন অসংখ্য বই। অবসর সময় কাঠিয়েছেন বইয়ের সঙ্গে।
অনিন্দ্য সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আগে বই পড়ার অভ্যাস ছিল না। গত বইমেলায় ঘুরতে এসে কেনা দুটি বই আমাকে বইয়ের প্রতি প্রেম শিখিয়েছে। করোনায় ঘরে থেকে মোবাইল ফোন বা এমন সব ডিভাইস থেকে সরে এসে বইয়ের সাথে প্রেম করেছি। গত এক বছরে অন্তত দেড়শ’র বেশি বই পড়েছি। মাঝখানে বই কেনার টাকা সংকটে পড়ি। টিউশনের বেতনে কেনা হতো বই। বইয়ের সাথে নিবিড় সম্পর্কে জড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘শত ব্যস্ততার মাঝে কাজের ফাঁকে এ বছরের বই মেলায় ঘুরতে আসি। বেশ কিছু ছোট বই মেলায় দেখতে গিয়ে পড়া হয়ে গেছে। কিনেছি বেশ কিছু বই।’
গতকাল শুক্রবার নগরের কাজীর দেউড়ি অমর একুশে বইমেলায় সরেজমিনে দেখা গেছে, বিকেল গড়াতেই লেখক, পাঠক দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। নানা বয়সী মানুষ ভিড় করছে মেলার স্টলগুলোতে। বিকিকিনির ধুম লেগেছে বই স্টলে। মেলায় তরুণ দুপুর তিনটায় মেলার গেট খোলা হলেও ৫টার পর জমে উঠে মেলা, বাড়ে ভিড়। যাদের অধিকাংশই দেখা গেছে তরুণ-তরুণী।
বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দলে দলে এসেছেন তরুণ-তরুণীরা। কেউ এসেছেন বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে, আবার কেউ এসেছেন যুগলবন্দি হয়ে।
মেলায় প্রকাশনার বিষয়ে কথা হয় লেখক হোসাইন কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মহামারি করোনা ক্রান্তিকালে রচিত কবিতাগুলো নিয়ে পঞ্চম কবিতার বই ‘ডাহুক এখনো ডাকে’ প্রকাশ হয়েছে। এতে করোনাকালের নিঃসঙ্গ হওয়া বিষয় ও প্রাণ-প্রকৃতির বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি সমাজ সংশ্লিষ্ট বিষয়ও এতে যুক্ত আছে। প্রাণ-প্রকৃতির পাশাপাশি গ্রামীণ জীবন যা লুকায়িত রয়েছে। বিশ্বায়নের কারণে লোক জীবন অনেকটা হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে। নিজের অস্তিত্ব বিপন্ন হচ্ছে। মূলত প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি আমাদের আকুতি বলবত থাকুক।’
বইমেলার আহ্বায়ক নিছার উদ্দিন আহমেদ সুপ্রভাতকে বলেন, ‘মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী আসছে। এতে বিকিকিনিও ভাল হচ্ছে। বিশেষ করে বন্ধের দিন শুক্র-শনিবারে বেশি মানুষ আসে।’