নিজস্ব প্রতিবেদক »
সিআরবি শিরীষতলায় ১৫ দিনব্যাপী ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা’ শুরু হয়েছে। ১৪ আগস্ট পর্যন্ত এ মেলা চলবে। আম, কাঁঠাল, লিচু, ত্বিন, রাম্বুটান, খেঁজুর, রোঙ্গসহ হরেক রকমের ফুল-ফলের চারা গাছে ছেয়ে গেছে মেলা প্রাঙ্গণ। রয়েছে বিদেশি নানা প্রজাতির গাছের চারাও। চোখ জুড়ানো এ মেলাটি এখনো জমে উঠেনি। তবে ছুটির দিনে মেলায় ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (৩১জুলাই) সকালে সিআরবিতে ‘গাছ লাগিয়ে যতœ করি-সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’- শিরোনামে শুরু হয়েছে বৃক্ষমেলা। চট্টগ্রামে উত্তর বন বিভাগ এ মেলার আয়োজন করে।
এবারের মেলায় প্রায় ৭০টি স্টল রয়েছে। গতকাল বিকালে সরেজমিন দেখা গেছে দেশি-বিদেশি ফল ও ফুলের চারা নিয়ে মেলার প্রাঙ্গণ সাজনো হয়েছে। বিভিন্ন স্টলে সারি সারি সাজানো আছে বনজ, ফলজ, সবজি, ওষুধি দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির গাছ। ফুলের মধ্যে ফ্যাশন ফ্লাওয়ার বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, থাই জবা ২০০ টাকা, পুঁতলিকা ২০ টাকা, মিনি রোঙ্গণ ১০০ টাকা, গোলাপ ১৫০ টাকা , এরোমেতিক জুঁই ২০০ টাকা, এলামুন্ডা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে জবা ফুল, ম্যান্ডেভিলা, ফুল, হাসনাহেনা, পলাশ, কনকচাপা, বাসন্তি, মালতী, নয়নতারাসহ হরেক রকম ফুল। যেগুলোর প্রতিটি চারা ৪০ থেকে ৫০০ টাকা দাম হাঁকানো হচ্ছে।
এছাড়া ফলের মধ্যে রাম্বুটান ৮০০ টাকা, অ্যাভোকেডো কলম ৮০০ টাকা এবং চারা ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আমেও রয়েছে নানা জাতের নানা দাম। মিয়াজিকি ৫০০, ব্যানেনা ম্যাংগো ৩০০ টাকা এছাড়া আ¤্রপালি, বারি(৩,৪), হাড়িভাঙ্গা ২০০ টাকা, মিশরীয় ডুমুর ৩৫০ টাকা, ভিয়েতনামা লাল কাঁঠাল ৫০০ টাকা, থাই পেয়ারা ২৫০ টাকা, শরীফা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেলায় আরো রয়েছে জয়ফল, সাদা নাশপতি, রাবাবা, মাল বেরি, লোকাট ফল, এবিউ ফল কালোজাম, সাতকরা, সফেদা, কদবেল, লটকনসহ নাম জানা-অজানা ফলের সমাহার। ফলের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধাও রয়েছে। বড় চারা যেমন নেওয়া যাচ্ছে, তেমনি নেওয়া যাচ্ছে ছোট ফলের চারাও। এক্ষেত্রে আকার অনুযায়ী দাম পড়ছে।
কসমো নার্সারির মালিক আবু রাশেদ নিহাদ বলেন, ‘ মেলাটি এবার মাস শেষে শুরু হয়েছে। আবহাওয়া তেমন ভালো নেই। যার কারণে এখনো জমে উঠেনি। যেহেতু অধিকাংশ মানুষ এখনো বেতন পাননি। তবে আগামী ৬-৭ দিনের পর মেলা জমে উঠবে। এবার তো নার্সারি স্টল বেড়েছে। দামও কম রয়েছে। আশা করি এবার ভালো বেচাকেনা হবে।’
খুলশি থেকে চারা কিনতে করতে আসা মুনজারিন ইসমা বলেন, ‘দামের খুব বেশি বলছেন বিক্রেতারা। গতবছরও একটু কম দামে চারা বিক্রি হয়েছে। তবে এবার স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। দামটা কম হলে সবাই চারা কিনতে পারবে।’
মেলায় আরও মাটি এবং প্লাস্টিকের চারা বিক্রি হচ্ছে। যেগুলো ৬০ থেকে ১৫০০ টাকায় ক্রয় করতে পারবেন ক্রেতারা। পাখির বাসাও স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। বাসার ইনডোর সাজানোর জন্য রয়েছে হরেক রকম গাছ। যেগুলো ১৫০ টাকা থেকে ১২ হাজার পাকা পর্যন্ত দাম হাঁকানো হচ্ছে।
এছাড়া বন বিভাগ থেকে একটি প্রদর্শনী রাখা হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন ফলের চারা রয়েছে। সেই চারার নাম এবং ওষুধি গুণাগুণ সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মেলায় বন বিভাগের তথ্যকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন ফৌজদারহাট বিজ্ঞান চেক স্টেশনের সহকারী স্টেশন কর্মকর্তা অলিউর ইসলাম। তিনি প্রদর্শনীটির সম্পর্কে বলেন, শহরের ছেলেমেয়েরা এখন কোনটা কি গাছ চেনে না। একই সাথে কোনটার কি ওষুধি গুণ রয়েছে অধিকাংশ লোকই তা জানে না। গাছের প্রতি জানার আগ্রহ সৃষ্টি করতে এই প্রদর্শনী।’