নিজস্ব প্রতিবেদক »
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দুই দফা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বন্ধ ঘোষণার পর থেকে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে শুরু করে। গতকাল বিকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা গেছে ছাত্ররা হল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
তানভীর হোসেন নামে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। মারামারির কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। ছাত্রাবাস ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। কীভাবে যাব চিন্তায় আছি। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ঘোষণার দাবি জানাই।
চমেকের শিক্ষার্থী আমীর হোসেন বলেন, আমার বাড়ি নোয়াখালী। হুট করে কলেজ-হোস্টেল বন্ধ করে দেওয়ায় বাড়ি যাওয়া কষ্টসাধ্য হবে। তাছাড়া এতদিন করোনার কারণে কলেজ বন্ধ ছিল। আজ আবার বন্ধ ঘোষণা করা হলো। আমরা কলেজে মারামারি চাই না।
ফিরোজ আহমদ নামে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী হল ছাড়ার সময় বলেন, কলেজ বন্ধের কারণে ছাত্ররা ক্ষতি গ্রস্ত হলো। ক্যাম্পাস দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শাহেনা আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীদের বিকেল ৫টার মধ্যে হল ছাড়তে হবে। তবে ছাত্রীরা পরেও যেতে পারবে। কারণ দূরের জেলায় বাড়ি এমন অনেক ছাত্রী আছে।
অধ্যক্ষ বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে একজন হাসপাতালে ভর্তি আছে। যেহেতু একজন আহত হয়েছে সে কারণে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সার্জারি বিভাগের প্রফেসর মতিউর রহমানকে। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, সংঘর্ষে জড়ানো একটি পক্ষ চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেয়।
গত শুক্রবার রাতে আ জ ম নাছির উদ্দীন অনুসারী দুই কর্মীকে উপমন্ত্রীর অনুসারীরা মারধর করেন। এরা হলেন মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০)। এর জের ধরে শনিবার সকালে নওফেল অনুসারী আকিব হোসেনকে (২০) মাথা ফাটিয়ে দেয় নাছিরের অনুসারীরা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে ছাত্রদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এরপর মেডিক্যাল কলেজে আমরা পুলিশ মোতায়েন করি। আজ (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে আকিব নামের এক ছাত্রকে মেডিক্যাল কলেজের মূল গেটের কাছাকাছি পপুলার হাসপাতালের সামনে মাথায় আঘাত করা হয়। এতে তার মাথা ফেটে যায়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। আমরা সর্তক আছি।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ ঘোষণা
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ