চট্টগ্রামে হৃদরোগের চিকিৎসাসুবিধা অপ্রতুল

বাংলাদেশে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হৃদ্‌রোগ। প্রতিদিন ৫৬২ জন মানুষ মারা যান হৃদ্‌রোগে।  যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন বেশ কিছু রোগের বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দেড় দশকের বেশি সময় ধরে গবেষণা করছে তারা বাংলাদেশসহ প্রায় ২০০টি দেশ নিয়ে  গবেষণা করছে। তাদের হিসাবে বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ হৃদ্‌রোগে মারা যান। অর্থাৎ দৈনিক ৫৬২ জনের মৃত্যু হচ্ছে হৃদ্‌রোগে।

আর দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রামে হৃদরোগী বেশি। চট্টগ্রামের হৃদরোগের প্রকোপ বেশি হলেও এখানে গড়ে ওঠেনি হৃদরোগের কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল। বেসরকারি বেশ কিছু হাসপাতালের হৃদরোগের চিকিৎসা চালু থাকলেও খরচের কারণে গরিব ও অসহায় রোগীরা সেখানে চিকিৎসা নিতে পারেন না। এসব রোগীর একমাত্র ঠিকানা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ। সেখানেও প্রায় সময় ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ, তিন গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। ফলে প্রায় সময় হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকদের রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়।

হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চট্টগ্রাম মহানগরছাড়াও বিভিন্নউপজেলা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান,কক্সবাজারসহ ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একাংশের বিশাল জনগোষ্ঠী চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রায় ৪ কোটি মানুষের ভরসাস্থল হৃদরোগ বিভাগ। কিন্তু সে তুলনায় হৃদরোগ বিভাগের সুযোগ–সুবিধা বাড়েনি। এখনো অনেক রোগীকে ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেলের হৃদরোগ বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানো গেলে রোগীরা আরো বেশি উপকৃত হবেন।

চিকিৎসাসেবায় চট্টগ্রাম এখনো অনেকটা পিছিয়ে। বিশেষ করে সরকারি পর্যায়ে হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগই এখনো সরকারি পর্যায়ের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র। তার ওপর নির্ভর করে এই অঞ্চলের প্রায় ৪ কোটি জনগোষ্ঠী। তুলনামূলকভাবে রাজধানী ঢাকায় সরকারি পর্যায়ের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ মোট ৭টি বিশেষায়িত হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। বাণিজ্যিক রাজধানী হওয়ার পরও চট্টগ্রামে নেই কোনো বিশেষায়িত সরকারি হৃদরোগ হাসপাতাল। চট্টগ্রামবাসী মনে করে বিশেষায়িত হাসপাতাল থাকলে এখানে কম খরচে আধুনিক হৃদরোগ সেবা আরো বিকশিত হতো।