নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের সিইপিজেড ও কেইপিজেডের রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে চলছে টিকা দান কার্যক্রম। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে যান চসিকের পরিদর্শক দল।
জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট থেকে এ টিকা দান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে সিনোফার্মের টিকা। প্রতিদিন ২ হাজার সিইপিজেড ও দেড় হাজার কেইপিজেড পোশাক শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে এ টিকা। ৫ দিন আগে শুরু এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বেপজার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে চসিক টিকা দিয়ে সহায়তা করছে।
বেপজা ব্যবস্থাপক মশিউদ্দিন বিন মেজবাহ সুপ্রভাতকে বলেন, ‘চসিক পরিদর্শক দল আমাদের টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সিইপিজেডে প্রতিদিন ২ হাজার পোশাক শ্রমিককে দেওয়া হচ্ছে এ টিকা। ১৫১ পোশাক কারখানার ১ লাখ ৬০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। সকলকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। চসিক ৫০ হাজার ডোজ টিকা দেবে বলে জানিয়েছেন। ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে।’
চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী সুপ্রভাতকে বলেন, ‘দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে পোশাক শ্রমিকদের প্রাধান্য দিয়ে ভ্যাকসিনের আওতায় এনেছি। তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আমরা সুপারভিশনে রাখছি।’
‘এস্ট্রোজেনেকা টিকাদান শেষ হবে এ মাসে’
মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই চলতি মাসে শেষ হবে করোনা টিকা ‘এস্ট্রোজেনেকা’। মজুদ রয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজার টিকা। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওষুধ কোম্পানি এসট্রোজেনেকা অক্সফোর্ডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ টিকা বানানোর কাজ শুরু করে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদনের চুক্তি করে। ট্রায়াল শেষে সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড টিকা বাংলাদেশে আসে। প্রথম ডোজ দেওয়ার পরে চট্টগ্রামে লাখের অধিক মানুষ দি¦তীয় ডোজ টিকা পায়নি। পরে আরও ১ লাখ ৯ হাজার ডোজ টিকা আসার খবর পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ১ সেপ্টেম্বর তারিখের তথ্য মতে, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৯ হাজার ডোজ এস্ট্রোজেনেকা টিকা আসে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও উপজেলায় ব্যবহৃত হয়েছে ৭৮ হাজার ৩শ’ ডোজ টিকা। মজুদ রয়েছে ২৯ হাজার ৭শ’ ডোজ। এসব টিকা থেকে ১৪টি উপজেলায় দেওয়া হয়েছে ৩৮ হাজার ৬২০ ডোজ টিকা। চসিকে দেওয়া হয়েছে ৬৯ হাজার ২৪০ ডোজ টিকা। জেলা ইপিআই স্টোরে মজুদ রয়েছে ১৪০ ডোজ টিকা।
১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রদত্ত এসব টিকা উপজেলা পর্যায়ে মানুষের মধ্যে প্রদান করা হয়েছে ৩০ হাজার ৩২৫ ডোজ। উপজেলায় টিকার মজুদ ছিল ৮ হাজার ২৯ ডোজ। অন্যদিকে চসিকে প্রদত্ত টিকার মধ্যে মানুষকে প্রদান করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৯৭ ডোজ টিকা। এতে মজুদ ছিল ২১ হাজার ২৬ ডোজ টিকা।
তথ্যমতে দেখা যায়, এস্ট্রাজেনেকার মজুদ টিকার মেয়াদোত্তীর্ণ হবে চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই শেষ করতে হবে এসব টিকা। চসিক দৈনিক গড়ে ৮ জনকে এস্ট্রোজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করছে। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপজেলা ও নগর মিলে মোট টিকা মজুদ রয়েছে ২৯ হাজার ৭শ’ ডোজ।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এস্ট্রোজেনেকা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের সাথে সাথে প্রথম ডোজ প্রদান কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। চলতি মাসের ৯ তারিখের মধ্যে প্রথম ডোজে অনেকটা শেষ করে ফেলবো। মজুদ টিকা আশা করি এই মাসেই শেষ হয়ে যাবে।’