এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া »
এতিমখানার নামে সরকারি অনুদান হিসেবে দেওয়া বরাদ্দ ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা ছাড় পেতে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের দুই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সমাজসেবা অধিদপ্তরের যুগ্মসচিব (পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নুরুল বাসির এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মচারী হলেন চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম এবং চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন। তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এতিমখানার অনুদান থেকে সমাজসেবা কর্মকর্তার ঘুষের ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া সংবাদটি দ্রুত ভাইরাল হয়। এরপর মামতাজ বেগম এবং আমজাদ হোসনের ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে এলে, শৃংখলা রক্ষায় অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার অনুদানের ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা পেতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. আমজাদ হোসেন ও অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দাব করে।
প্রথম কিস্তির টাকা উত্তোলনের পর মমতাজ বেগমকে নগদ ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়া হয়। যার ভিডিও চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রচারের পর ভাইরাল হয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে দুর্নীতিগ্রস্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতা বই নিতে গেলেও প্রতিজন উপকারভোগীর কাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করতেন আমজাদ হোসেন ও মমতাজ বেগম।
ভুক্তভোগী এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, যেখানে এতিমখানা তাদের হাত থেকে রক্ষা পায় না সেখানে সাধারণ মানুষ কি পরিমাণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলা মুশকিল। এতদিন পর হলেও দুর্নীতিগ্রস্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমি খুশি। এখান থেকে অনেকে শিক্ষা নিতে পারেন।
বরখাস্তের বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার রাতে চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম ও চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. আমজাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দুইজনই মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।