মোংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিপদ সংকেত দেখালো দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। সাগরে অবস্থান করে ক্রমে শক্তিশালী হয়ে উঠা ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর ও বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করার কথা। সেই হিসেবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৮ নম্বরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ বিকেল তিনটায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা খেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে ঘনীভূত হয়ে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ২১০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
তবে ঘূর্ণিঝড়টি গতকালের চেয়ে আজ বেশি বেগে অগ্রসর হচ্ছে। রোববার ২৪ ঘণ্টায় যেখানে ৭০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছিল, আজ ১৮ ঘণ্টায় (গতকাল রাত ৯টা থেকে আজ বিকাল ৩টা পর্যন্ত) ২১০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে। গতকাল ঘণ্টায় তিন কিলোমিটার গতিতে অগ্রসর হলেও আজ অগ্রসর হয়েছে ঘণ্টায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার গতিতে। সেই হিসেবে উপকূলে আঘাতের সময় একটু এগিয়ে এসেছে। প্রথমদিকে আগামী বুধবার আঘাত করতে পারে বলা হলেও আজ ১৮ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি বাংলাদেশের খুলনা ও চট্টগ্রামের উপকূলের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।
আর অতিক্রমের সময় উপকূলীয় এলাকায় প্রচন্ড গতিতে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ঘটাতে পারে। এজন্য সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং এসব এলাকার পাশ্ববর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে চার ও পাঁচ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এসব এলাকায় ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা একাধিক নিম্নচাপ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। এসব নিম্নচাপ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনাও বলা হয়েছে। বছরের এসময়ে সাগরে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে। এপ্রিল-মে ও সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম।